হাই কোর্টের নির্দেশে শিক্ষকতার স্বপ্ন সফল হয়েছে ক্যানসার আক্রান্ত সোমা দাসের। এ বিষয়ে তিনি দীর্ঘ দিন লড়াই করছিলেন। একা তিনি নন, ওই লড়াইয়ে তাঁর সঙ্গী অনেকেই। তাঁদেরই এক জন অনুপ ঘোষ। মস্তিষ্কে টিউমার, সঙ্গে ডায়াবিটিস নিয়ে তিনিও চাকরির দাবিতে দীর্ঘ সাড়ে চারশো দিনের লড়াই চালাচ্ছেন গাঁধী মূর্তির পাদদেশে। সোমার চাকরি পাওয়ায় খুশি তিনি। কিন্তু নিজে সহানুভূতির এমন চাকরি পেতে চান না নদিয়ার ওই যুবক। এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে একের পর এক মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। সেই আবহে সোমাকে নিয়োগপত্র দিয়েছেন এসএসসি কর্তৃপক্ষ। বীরভূমের নলহাটিতে নিজের বাড়ির অদূরের স্কুলে চাকরি পেয়েছেন তিনি। সোমাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে অনুপ বলেন, ‘‘সহানুভূতির চাকরি চাই না। আমরা আন্দোলন করছি স্বচ্ছ নিয়োগের জন্য। আমরা যোগ্য। অযোগ্যেরা অন্যায় ভাবে আমাদের চাকরিটা পেয়েছেন। আমরা তো নিজেদের যোগ্যতার ভিত্তিতেই চাকরির দাবি করছি। তাই আমাদের এই আন্দোলন তত দিন চলবে, যত দিন না সকল যোগ্য প্রার্থী চাকরি পাচ্ছেন।’’
অনুপের বাড়ি নদিয়ার বেথুয়াডহরিতে। বাড়িতে স্ত্রী ও কন্যা রয়েছেন। একমাত্র মেয়ে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। অনুপের দাবি, যাঁরা তাঁর সঙ্গে আন্দোলনমঞ্চে রয়েছেন, তাঁদের সকলের নাম মেধাতালিকায় রয়েছে। তা সত্ত্বেও চাকরি না পাওয়ায় এক বছরের বেশি সময় ধরে তাঁরা আন্দোলন মঞ্চে রয়েছেন। চাকরির দাবিতে। অথচ যাঁরা অযোগ্য প্রার্থী, কোনও কোনও ক্ষেত্রে পরীক্ষা না দিয়েও তাঁরা চাকরি করছেন। অনুপের কথায়, ‘‘এটা কি অভিপ্রেত? আমরা এর বিচার দাবি করছি।’’
আন্দোলন চলাকালীনই মস্তিষ্কে টিউমার ধরা পড়ে অনুপের। লক্ষাধিক টাকা খরচ করে এক বার অস্ত্রোপচার হয়েছে। চিকিৎসকেরা আবারও অস্ত্রোপচারের করতে হতে পারে বলে জানিয়েছেন। চিকিৎসার জন্য টাকাপয়সা জোগাড় করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে অনুপ ও তাঁর পরিবারকে। অনটনের সংসার সামলে অনুপ ন্যায়বিচারের দাবিতে আন্দোলনে অনড়। ঠিক যেমন চাকরি পেয়েও আন্দোলন চালিয়ে যেতে চান সোমা।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।