—ফাইল চিত্র।
আইনি জটিলতায় বিধানসভায় আলোচনার মাঝপথেই থমকাল স্টাফ সিলেকশন কমিশন সংক্রান্ত বিল। যা নজিরবিহীন বলেই মত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের।
বৃহস্পতিবার রাজ্য বিধানসভায় ‘দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টাফ সিলেকশন কমিশন (রিপিলিং) (রিপিলিং) বিল, ২০১৯’ উত্থাপন করেন পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বিরোধীরা দাবি করেন, বিলটিতে ত্রুটি রয়েছে। তাই বিলটির উদ্দেশ্য ‘ভাল’ হলেও আইনি কারণে আদালত তা বাতিল করে দিতে পারে। কার্যত সেই দাবিকে মান্যতা দিয়ে আলোচনা চলাকালীন আইনের বিষয়গুলি খতিয়ে দেখে তবে বিল নিয়ে
এগোনোর জন্য সরকারকে পরামর্শ দেন অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই পরামর্শ মেনেই পরিষদীয় মন্ত্রী জানিয়ে দেন, বিলের যে আইনি দিকগুলি তুলে ধরা হয়েছে, তা যুক্ত করেই পরবর্তী আলোচনা এগোনো হবে। এর পরেই স্পিকার জানান, যেখানে আলোচনা শেষ হয়েছে আগামী মঙ্গলবার সেখান থেকেই আলোচনা শুরু হবে।
এ দিন বিলের আলোচনায় বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান বলেন, বিলটিতে ‘ফিনান্সিয়াল মেমোরান্ডাম’-এর উল্লেখ নেই। তাতে রাজ্যপালের সম্মতিও নেই। ফলে আদালত এটি খারিজ করতে পারে। অ্যাডভোকেট জেনারেলকে বিধানসভায় হাজির করিয়ে বিলের আইনি বিষয়টি স্পষ্ট করার দাবি জানান তিনি। বিলটির আইনি ত্রুটির কথা তুলে ধরেন সিপিএম বিধায়ক প্রদীপ সাহাও। আলোচনায় যোগ দিয়েছিলেন দুই তৃণমূল বিধায়ক জ্যোর্তিময় কর এবং ব্রজমোহন মজুমদার। তার পরেই বিলটি স্থগিত হয়ে যায়।
প্রশাসনের শীর্ষমহলের বক্তব্য, এসএসসি গঠন সংক্রান্ত প্রাথমিক বিলটি (২০১১) ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। আর একটি বিলের (২০১৭) মাধ্যমে ফিরিয়ে নেওয়ার
সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হল। অর্থাৎ মূল বিলটি (২০১১) ফের প্রতিষ্ঠিত হল। বিলটি নিয়ে যে সমস্যা হয়েছে, তা হত না, যদি নতুন করে একটি বিল পেশ করা হত। তা করা হয়নি বলেই ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছে। সূত্রের খবর, বুধবার বিকেলে বিধানসভার কার্য উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে এসএসসি বিলে ‘ত্রুটি’র প্রসঙ্গ উঠেছিল। অভিযোগ, তার পরেও আইন দফতর প্রয়োজনীয় ‘সক্রিয়তা’ দেখায়নি। প্রশাসনের একাংশের মতে, আইন দফতর তৎপর হলে এই পরিস্থিতি হত না। এ বিষয়ে বক্তব্য জানার চেষ্টা করা হলে আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক ফোন ধরেননি। এসএমএস-এর উত্তরও দেননি।
বিলটিতে উল্লেখ থাকা আর্থিক দায়ভার প্রসঙ্গে সংশ্লিষ্ট মহলের ব্যাখ্যা, নতুন করে এসএসসি গঠনে কোনও খরচ হবে না, এটাই হয়তো বোঝাতে চাওয়া হয়েছে। অবশ্য আধিকারিক মহলের আরেকটি অংশের যুক্তি, সরকারি পরিভাষায় ‘ফিনান্সিয়াল ইমপ্লিকেশন’-এর অর্থ কোনও দফতরকে পরিকল্পনা খাত থেকে বিশেষ কোনও খরচের জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হচ্ছে কি না। কিন্তু এসএসসি প্রশাসন ও কর্মিবর্গ দফতরের অধীনে একটি ডিরেক্টরেট হিসেবে কাজ করে। ফলে তাকে পৃথক ভাবে এই অর্থ বরাদ্দের দরকার হয় না। মনে করা হচ্ছে, এসএসসির অফিস তৈরি, কর্মী-আধিকারিক-সহ পরিচালন সংক্রান্ত খরচকেই বোঝাতে চেয়েছেন বিরোধীরা।