প্রতীকী ছবি
সরকারি অনুদান পাওয়া বেশ কিছু ক্লাব তাদের ‘সামাজিক কর্তব্য’ ঠিক ভাবে পালন করেনি বলে অভিমত রাজ্যের। তাই অনুদানের বকেয়া কিস্তি দেওয়ার আগে তাদের সে ব্যাপারে পরামর্শ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্রীড়া দফতর। যে সিদ্ধান্তের পিছনে রাজনৈতিক কৌশল দেখছেন বিরোধীরা।
২০১২ সালে রাজ্যের ক্লাব ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে আর্থিক সাহায্য দেওয়ার এই পরিকল্পনা নিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ক্রীড়া পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য প্রথম দফায় ৭৮১টি ক্লাবকে অনুদান দেওয়া হয়েছিল। পরে আরও কয়েক হাজার ক্লাব এই প্রকল্পের আওতায় আসে। প্রথম বছর অনুদান দেওয়া হয় দু’লক্ষ টাকা। তার পর তিন বছর এক লক্ষ টাকা করে। অনুদানের জন্য আবেদন করার সময়ই ক্রীড়া দফতরের নির্দিষ্ট বিধি মানতে হয় ক্লাব ও প্রতিষ্ঠানগুলিকে। পরবর্তী কিস্তির টাকা পেতে আবেদনের জন্যও নির্দিষ্ট নিয়মবিধি রয়েছে।
ঘটনা হল, শুধু ক্রীড়া পরিকাঠামো উন্নয়ন নয়, ক্লাব ও বিভিন্ন ধরনের প্রতিষ্ঠানের সামাজিক প্রভাবের কথা মাথায় রেখে এই প্রকল্প থেকে রাজনৈতিক লাভের অঙ্কও কষেছিল শাসক শিবির। কিন্তু গত লোকসভা ভোটে ধাক্কা খাওয়ার পরে ক্লাবগুলি সম্পর্কে নতুন করে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে তৃণমূল। সরকারি সূত্র বলা হচ্ছে, পর্যালোচনা করে দেখা গিয়েছে, ‘সামাজিক কর্তব্য’ পালনের ক্ষেত্রে কোনও কোনও ক্লাব বা প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা আশানুরূপ নয়। তাই তাদের পরামর্শ দেওয়ার কথা ভাবা হয়েছে। ঠিক হয়েছে, কলকাতা পুলিশ এবং রাজ্যের থানাগুলি অনুদানের চেক বিলি করবে ও ক্লাবগুলিকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেবে। তবে কারও প্রাপ্যই আটকানো হবে না। ক্লাবগুলিকে ‘সামাজিক কর্তব্য’ বোঝাতে ইতিমধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় সমন্বয় কমিটি তৈরি
করা হয়েছে। বহু জায়গায় সেই কমিটির সঙ্গে যুক্ত আছেন শাসক দলের স্থানীয় বিধায়ক।
বিরোধীদের অভিযোগ, প্রতিটি ক্লাবের রাজনৈতিক আনুগত্য নিশ্চিত করতেই পুলিশের মাধ্যমে চেক বিলির সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। শাসক দলের নেতারা অবশ্য প্রকাশ্যে সেই অভিযোগ মানতে নারাজ। ক্লাব-সংগঠনের প্রভাব সর্বত্র তাঁদের পক্ষে আসেনি সে কথা স্বীকার করলেও শাসক দলের এক শীর্ষনেতার
কথায়, ‘‘এমন নয় যে আমরা ক্লাবকে অনুদান দিয়ে তৃণমূলের পক্ষ নিতে বলছি। তবে তারা কোনও পক্ষ নিলে তা অবশ্যই আমাদের বিবেচনায় রাখতে হবে।’’