প্রতীকী ছবি।
দুয়ারে সরকার কর্মসূচির শিবিরগুলি থেকে প্রথম ৪৫ দিনে জাতি শংসাপত্র দেওয়ার যে গতি ছিল, শেষ ২৪ দিনে তা-ই বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। সোমবার পর্যন্ত শংসাপত্র বিলির সংখ্যা ২০ লক্ষ পার হয়েছে বলে খবর।
১ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়েছে দুয়ারে সরকারের কর্মসূচি। জেলা প্রশাসনগুলির সূত্রে পাওয়া সম্মিলিত তথ্য অনুযায়ী, ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সরকারি শিবিরগুলি থেকে জাতি শংসাপত্র দেওয়ার সংখ্যা ছিল ১০ লক্ষের কিছু বেশি। ১৬ জানুয়ারি থেকে ৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সেই সংখ্যা ২০ লক্ষ পার হয়ে গিয়েছে। গত দশ বছরের মধ্যে এ বারই সর্বাধিক সংখ্যায় শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে।
প্রশাসনের খবর, দুয়ারে সরকারের শুরুর দিকে জাতি শংসাপত্র দেওয়ার গতিতে খুশি ছিল না সরকারের শীর্ষ মহল। তাই গতি বাড়ানোর নির্দেশ পান অফিসারেরা। শীর্ষমহলের নির্দেশ ছিল, একবারে ফিরিয়ে দেওয়া যাবে না আবেদনকারীকে। পরিবারের এক জনের নথি থাকলে পৃথক ভাবে আর যাচাইয়ের দরকার হবে না। আবেদনকারী সঙ্গে সঙ্গে নথি দিতে না-পারলে প্রশাসনকেই সরকারি রেকর্ড থেকে সংশ্লিষ্টের প্রামাণ্য তথ্য খুঁজে বের করতে হবে। সেই মতোই কাজ শুরু করেন জেলাস্তরের অফিসারেরা। জেলায় জেলায় অফিসারদের পৃথক দল গঠন করেন জেলাশাসকেরা। সেই মহলের বক্তব্য, পদ্ধতি সরল হওয়ায় জাতি শংসাপত্র দেওয়া গিয়েছে।
এক জেলা-কর্তার কথায়, ‘‘১৯৮১ থেকে ২০১১ সালের মধ্যে দেওয়া প্রায় দেড় কোটি শংসাপত্রের প্রতিলিপি সরকারের কাছে ছিল। ২০১১ সালের পর থেকে দেওয়া শংসাপত্রের তথ্যও প্রশাসনের কাছে অনলাইনে রয়েছে। ফলে রাজ্যের যে কোনও প্রান্ত থেকে তা দেখা সম্ভব। স্বল্প সময়ের মধ্যে যাচাই প্রক্রিয়ায় এই তথ্যভান্ডার ভীষণ কাজে লেগেছে।’’
সূত্রের খবর, প্রায় ২০ লক্ষ শংসাপত্রের মধ্যে তফসিলি জাতির প্রায় ১৩ লক্ষ শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে। আনুমানিক ২ লক্ষ দেওয়া হয়েছে তফসিলি জনজাতি এবং প্রায় ৪ লক্ষ শংসাপত্র অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণিভুক্ত মানুষদের জন্য। শংসাপত্র সংখ্যার নিরিখে জেলাগুলির মধ্যে সর্বাগ্রে রয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা। নদিয়া, উত্তর দিনাজপুর, কোচবিহার, উত্তর ২৪ পরগনা, মালদহ, জলপাইগুড়িতেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে। তবে জেলা-কর্তারা জানাচ্ছেন, পদ্ধতি সরল হলেও আবেদনপত্রের যাচাই-প্রক্রিয়া থামানো হয়নি। পৃথক ভাবে তৈরি অফিসারদের দল প্রতিটি আবেদনের যথার্থতা যাচাই করেছেন। ফলে লক্ষাধিক ‘ভুয়ো’ আবেদন বাতিল করেছে প্রশাসন।