—প্রতীকী ছবি।
সিপিএমের তিন দিনের রাজ্য কমিটির বর্ধিত অধিবেশন চলছে। সেখানে শুধু লোকসভা ভোটের কৌশল নির্ধারণ নয়, রাজ্য কমিটিতেও আনা হবে নতুন মুখ। একই সঙ্গে বঙ্গ সিপিএমের ইতিহাসে বিরল ঘটনা ঘটতে পারে বলেও দলীয় সূত্রে খবর। সিপিএমের দৈনিক প্রভাতী মুখপত্রের সম্পাদক পদেও হতে পারে বদল। দলীয় সম্মেলন ছাড়া দৈনিক মুখপত্রের সম্পাদক বদল নজিরবিহীন।
এর পরেই কৌতূহল তৈরি হয়েছে, সিপিএমের মুখপত্রের সম্পাদক পদে কাকে আনা হবে? বর্তমানে সম্পাদক পদে রয়েছেন দেবাশিস চক্রবর্তী। তাঁর বদলে ওই পদে আসতে পারেন দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শমীক লাহিড়ী।
সিপিএম সূত্রে খবর, দলীয় দৈনিক মুখপত্র যে ভাবে পরিচালিত হচ্ছিল, তা নিয়ে দলের মধ্যে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। ‘দলের লাইন’ অনুযায়ী খবর পরিবেশনের ক্ষেত্রে ত্রুটি, সর্বক্ষণের কর্মীদের সবাইকে যে ভাবে দেখা উচিত, তা হচ্ছিল না বলে অভিযোগ। যে কারণে সর্বক্ষণের অনেক কর্মী পার্টির পত্রিকা ফ্রন্ট ছেড়ে পৃথক ফ্রন্টে চলে গিয়েছেন। সার্বিক ভাবে এজেসি বোস রোডের উপর বাড়িটিতে ক্ষোভের বারুদ জমছিল বলেই ওই সূত্রের দাবি। সিপিএমের অনেকের মতে, তা বিস্ফোরণ হওয়ার আগেই পদক্ষেপ করল ৩১ নম্বর আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। একটা সময়ে এই ঠিকানাতেই দলের দৈনিক প্রভাতী মুখপত্রের দফতর ছিল।
সিপিএম সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্ধিত অধিবেশন শেষে দলের রাজ্য কমিটিতে নতুন কিছু মুখকে নেওয়া হতে পারে। ওই সূত্রের দাবি, একদা কলকাতা পুরনিগমের মেয়র পারিষদ ফৈয়াজ আহমেদ খানকে রাজ্য কমিটিতে আনতে পারে সিপিএম। হিন্দি ও উর্দুভাষী কোটায় ফৈয়াজকে রাজ্য কমিটিতে নিতে পারে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআইয়ের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হিমঘ্নরাজ ভট্টাচার্যকে রাজ্য কমিটির আমন্ত্রিত সদস্য করা হতে পারে। একই সঙ্গে প্রখ্যাত আইনজীবী তথা রাজ্যসভার সাংসদ বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যকে স্থায়ী আমন্ত্রিত হিসেবে রাজ্য কমিটিতে নিতে পারে সিপিএম।
তবে, দৈনিক পত্রিকার সম্পাদক বদলের প্রস্তাব সিপিএমের মধ্যে তোলপাড় ফেলে দিয়েছে। সিপিএম সূত্রে জানা গিয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে সম্মেলন ছাড়া এ ভাবে পত্রিকার সম্পাদক বদল হয়নি। তথ্য-পরিসংখ্যান রাখা অনেক নেতাও এই রকম উদাহরণ খুঁজে পাচ্ছেন না। প্রসঙ্গত, প্রয়াত অনিল বিশ্বাস একটা সময়ে ছিলেন সিপিএমের প্রভাতী দৈনিকের সম্পাদক। বলা ভাল, তাঁর হাত ধরেই সান্ধ্য থেকে প্রভাতী হয়েছিল সিপিএমের রাজ্য কমিটির মুখপত্র। অনিল যখন দলের রাজ্য সম্পাদক হন, সেই সময়েও পত্রিকার সম্পাদক বদল হয়েছিল সম্মেলনের মধ্যে দিয়েই। অনিলের স্থলাভিষিক্ত হয়েছিলেন দীপেন ঘোষ। তার পর দীপেন ঘোষের জায়গায় এসেছিলেন নারায়ণ দত্ত। নারায়ণের পর দলীয় মুখপত্রের সম্পাদক হয়েছিলেন অভীক দত্ত। অভীকের আকস্মিক অসুস্থতা এবং প্রয়াণের পর দল দায়িত্ব দেয় দেবাশিসকে।