মমতার বিরুদ্ধে প্রার্থী দিতে নারাজ অধীররা।
ভবানীপুরের উপনির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রার্থী না দেওয়ার যে প্রস্তাব দিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী, তাকে ঘিরে জোরদার চর্চা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক শিবিরে। কংগ্রেসের অনেক নেতাই প্রদেশ সভাপতির প্রস্তাবের সঙ্গে সহমত। তবে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অন্য দিক ভেবে দেখার জন্য দলে বিশদে আলোচনার দাবিও তুলছেন তাঁরা। আবার বাম শিবিরের অনেকেই একেবারে ময়দান ছাড়ার পক্ষপাতী নন।
প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান শুক্রবার স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের পরে রাজ্যে তিনটি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে তিনি খড়গপুর আসন তৃণমূলকে ছেড়ে দেওয়ার কথা বলেছিলেন বিজেপিকে রোখার স্বার্থেই। বিনিময়ে তৃণমূল কালিয়াগঞ্জে কংগ্রেসকে সমর্থন দিত। কিন্তু সেই সময়ে ওই প্রস্তাবের জন্য কংগ্রেসের অনেক নেতাই বিরূপ মন্তব্য করেছিলেন, এখন আবার ভবানীপুরকে ঘিরে একই ভাবনা ভাবতে হচ্ছে! শুভঙ্কর সরকারের মতো প্রদেশ নেতাদের একাংশ অধীরবাবুর প্রস্তাবকে রাজনৈতিক ভাবে সমর্থন জানিয়েই দলে আরও আলোচনার দাবি করছেন। এই অংশের নেতাদের বক্তব্য, কংগ্রেসের প্রার্থী না থাকলে সেখানে তৃণমূলকে সমর্থন করতে চান না, এমন মানুষকে জোর করেই বিজেপির দিকে ঠেলে দেওয়া হবে! তাই ভাল করে ভেবেচিন্তেই এই বিষয়ে এগোনো উচিত। স্বয়ং অধীরবাবু অবশ্য বলেছেন, ‘‘কোনও নির্বাচনী আঁতাঁতের কথা বলিনি। যিনি মুখ্যমন্ত্রী হয়ে গিয়েছেন, তাঁর বিরুদ্ধে প্রার্থী না দেওয়াই আমার মত। নিশ্চয়ই এই নিয়ে আলোচনা হবে।’’
প্রবীণ নেতাদের কেউ কেউ মনে করিয়ে দিচ্ছেন, নয়ের দশকের গোড়ায় পি ভি নরসিংহ প্রধানমন্ত্রী হয়ে যাওয়ার পরে যখন লোকসভায় লড়তে অন্ধ্রপ্রদেশে গিয়েছিলেন, রাজ্যে কংগ্রেসের বিরোধী হলেও ‘তেলুগু বিড্ডা’র প্রতি সৌজন্যে দেখিয়ে এনটিআর-এর তেলুগু দেশম তাঁর বিরুদ্ধে প্রার্থী দেয়নি। এই প্রশ্নে কংগ্রেসের সঙ্গে আলোচনার দাবি উঠেছে বাম শিবিরেও। বামেদের একাংশের বক্তব্য, উপনির্বাচন কবে হবে, এখনও ঠিক হয়নি। সেখানে পরিস্থিতি মাথায় রেখে এবং বিজেপিকে সুবিধা করে না দেওয়ার ভাবনা থেকেই পদক্ষেপ করা উচিত।