প্রতীকী ছবি।
বারাণসী থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে গত ৪ মার্চ কলকাতায় ফেরার সময় বিমানের ভিতরে যাত্রীদের যে শারীরিক অস্বস্তি হয়েছিল, বিমানকর্মীরাও তা মেনে নিয়েছেন বলে বিমানবন্দরের একটি সূত্র জানিয়েছে। তবে ঠিক কী কারণে সেই অস্বস্তি, তদন্ত চলছে মূলত তা নিয়েই। তদন্তের একটি প্রাথমিক রিপোর্ট ইতিমধ্যেই দিল্লিতে পাঠানো হয়েছে। বিভিন্ন নথি জোগাড়ের কাজ চলছে। চূড়ান্ত রিপোর্ট দিল্লিতেই পাঠানো হবে বলে জানানো হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে কলকাতা বিমানবন্দরে কর্মরত তৃণমূলের কর্মীরা মঙ্গলবার বিক্ষোভ দেখান। সেখানে স্থানীয় তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ও উপস্থিত ছিলেন। পরে বিমানবন্দরের অধিকর্তা সি পট্টাভির সঙ্গে দেখা করেন সৌগতবাবু। বিস্তারিত ভাবে বিষয়টি জানতে চান তিনি। দাবি করেন, মুখ্যমন্ত্রীর বিমান-বিভ্রাটের পিছনে দোষী ব্যক্তিদের শাস্তি হোক।
বিমানবন্দরের কর্তাদের বক্তব্য, দোষী হিসেবে এখনও কাউকেই চিহ্নিত করা যায়নি। বিমান ওঠানামার সঙ্গে পাইলট এবং এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোলের (এটিসি) অফিসারেরাই যুক্ত থাকেন। বিমানবন্দরের একটি সূত্রের দাবি, সে-দিন এটিসি-র অফিসারেরা যে নিজেদের দায়িত্ব যথাযথ ভাবেই পালন করেছিলেন, প্রাথমিক তদন্তে সেটা উঠে এসেছে। এ ক্ষেত্রে আবহাওয়া গন্ডগোল পাকিয়ে থাকতে পারে বলে আগেই সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছে। তবে আবহাওয়া ঠিক কতটা গন্ডগোল পাকিয়েছিল, তা এখনও পুরোপুরি নির্ধারণ করা যায়নি বলে বিমানবন্দর সূত্রের খবর।
বিশেষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য, সে-দিন মুখ্যমন্ত্রী ফ্যালকন বিমান মাটি থেকে ৩৭ হাজার ফুট উপর দিয়ে উড়ে আসছিল। সেটি যখন কলকাতা থেকে ১২০ নটিক্যাল মাইল (২২২ কিলোমিটার) দূরে, নিয়ম মেনে তখনই তার মুখ নামিয়ে নেমে আসার কথা ছিল। কিন্তু বিমানবন্দরের নথি বলছে, সেই বিমান নামতে
শুরু করে ৯৫ নটিক্যাল মাইল (প্রায় ১৭৫ কিলোমিটার) থেকে। ফলে স্বাভাবিক যে-গতিতে (মিনিটে এক থেকে দেড় হাজার ফুট)
তার নেমে আসার কথা ছিল, তাকে সে-দিন নামতে হয় তার প্রায় তিন গুণ গতিতে। বিশেষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য, সে-রকম ঘটে থাকলে ভিতরে থাকা যাত্রীদের অস্বস্তি হওয়া স্বাভাবিক। যদিও সাত হাজার ফুটের পর থেকে বিমানের নেমে আসার গতি তুলনায়
অনেক কম ছিল বলেও দাবি বিমানবন্দরের কর্তাদের।