নিজেদের পরিষেবা পৌঁছতে পঞ্চায়েত দফতরের নিয়ন্ত্রণে রাজ্যে ‘বাংলা সহায়তা কেন্দ্র’ (বিএসকে) গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। —ফাইল চিত্র।
তৃণমূল স্তর পর্যন্ত সরকারি পরিষেবা পৌঁছতে গোটা রাজ্যে কেন্দ্রীয় ইলেকট্রনিক্স ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের অধীন তথ্যমিত্র কেন্দ্রগুলি (সিএসসি)সক্রিয় রয়েছে। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, এ বার নিজেদের পরিষেবা পৌঁছতে পঞ্চায়েত দফতরের নিয়ন্ত্রণে রাজ্যে ‘বাংলা সহায়তা কেন্দ্র’ (বিএসকে) গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। এই সিদ্ধান্তকে ঘিরেই তৈরি হয়েছে জল্পনা।
আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচন। পর্যবেক্ষক মহলের অনুমান, তাই নিজস্ব পরিষেবাগুলির নিবিড় প্রচার এবং তা সর্বত্র পৌঁছতে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে থাকা সংস্থাকেই কাজে লাগাতে চাইছে রাজ্য। অবশ্য প্রশাসনিক যুক্তি, বিভিন্ন দফতরের অনলাইন পরিষেবা আরও বেশি নাগরিকের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতেই এই পদক্ষেপ করা হচ্ছে।
প্রাথমিক ভাবে গোটা রাজ্যের ৩৪২ বিডিও, ৬৬ এসডিও, ২৩ জেলার জেলাশাসকের অফিস, ১৫০০ প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং ৮১৩টি লাইব্রেরিতে মোট ২৭৪৪ বিএসকে থাকবে। দু’জন সহায়ক দু’টি করে প্রিন্টার-স্ক্যানার এবং ইন্টারনেট সংযোগ থাকা কম্পিউটার নিয়ে পরিষেবা দেবেন। ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে বিএসকে সর্বত্র চালু করতে জেলাশাসকদের নির্দেশ দিয়েছেন পঞ্চায়েত সচিব এম ভি রাও।
আরও পড়ুন: অবস্থান বদলাচ্ছে না ভাড়া বাড়ানো নিয়ে, জেদের লড়াইয়ে অচল বাস
এখন কেন্দ্র-রাজ্য উভয় সরকারের বিভিন্ন পরিষেবা পেতে সাধারণ মানুষকে সাহায্য করে সিএসসি। এখন রাজ্যে প্রায় ১৭,৫০০ সিএসসি-র সঙ্গে প্রায় ৫০,০০০ মানুষ যুক্ত। বিভিন্ন প্রকল্পে নাম তোলা, শংসাপত্র, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ব্যাঙ্কের কাজে সহায়তা, বিমা, কেন্দ্র-রাজ্য দফতরওয়াড়ি পরিষেবা, গরিব কল্যাণের কেন্দ্রীয় অর্থ, কেন্দ্রীয় উজ্বলা গ্যাস প্রকল্পের মতো পরিষেবা দিচ্ছে। কোভিড-পরিস্থিতিতে ই-স্টোর হিসেবে গ্রামীণ এলাকার কেনাবেচায় সাহায্য করছে প্রায় সাড়ে চার হাজার সিএসসি।
আধিকারিকদের একাংশের ব্যাখ্যা, দুই সরকারের পরিষেবা পৌঁছনোর কাজ করলেও কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণাধীন সিএসসি কেন্দ্রের কাজই বেশি করে । কোভিড-পরিস্থিতিতে এর বহর কিছুটা বেড়েছে। ফলে রাজ্যের নিজস্ব উদ্যোগগুলির প্রচারে ভাটা পড়ছে। পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, “আগের পদ্ধতি নেই। সিএসসি আমাদের অধীনেও নয়। এখন কেন্দ্র এগুলিকে অন্য ভাবে চালাচ্ছে। তাই বিএসকে তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার।”
২০০৬ সালে জাতীয় ই-গভর্ন্যান্স পরিকল্পনার আওতায় সরকারি পরিষেবা পৌঁছতে এবং বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে তৈরি হয়েছিল সিএসসি।