(বাঁ দিকে) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অমিত শাহ, নরেন্দ্র মোদী, বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল ছবি।
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় মঙ্গলবার পাশ হয়েছে ‘দ্য অপরাজিতা উইমেন অ্যান্ড চাইল্ড (ওয়েস্ট বেঙ্গল ক্রিমিনাল ল অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল ২০২৪’। এ বার সেই বিল পাঠান হল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে। রাজ্য বিধানসভায় কোনও বিল পাশ হলে তা প্রধানমন্ত্রী বা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে পাঠানো রীতি নয়। নিয়মানুযায়ী, বিধানসভায় পাশ হওয়া যে কোনও বিল পাঠানো হয় রাজভবনে। সেই বিলে রাজ্যপাল স্বাক্ষর করলে তা আইনে পরিণত হয়। কিন্তু বিল নিয়ে রাজ্যপাল যদি কোনও সিদ্ধান্তে আসতে না পারেন, বা কোনও পরামর্শের প্রয়োজন হয়, তবে তা তিনি পাঠিয়ে দেন রাষ্ট্রপতির কাছে। সেই বিলের ক্ষেত্রে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন রাষ্ট্রপতিই।
তবে কোনও ক্ষেত্রেই বিল দেশের প্রধানমন্ত্রী বা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে পাঠানো হয় না। কিন্তু ব্যতিক্রমী ভাবে এই বিলটি পাঠানো হয়েছে মোদী-শাহের কাছে। যদিও, এ প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করতে চাননি স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে বিলটি যে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে পাঠানোর পাশাপাশি, মোদী-শাহের কাছে পাঠানো হয়েছে, তা জানিয়েছে বিধানসভার সচিবালয়ের একটি সূত্র।
বাংলার রাজনীতির কারবারিদের একাংশের মতে, এ ভাবে রাজ্যের শাসকদল কেন্দ্রের শাসকদলকে পাল্টা চাপের মুখে ফেলে দিতে চাইছে। কারণ মঙ্গলবার বিধানসভায় বিল নিয়ে আলোচনার সময় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, ‘‘এই বিল আইনে পরিণত করতে আমরা দায়িত্বশীল বিরোধী হিসাবে সমর্থন জানাব। কিন্তু এই বিলকে আইনে পরিণত করা থেকে শুরু করে রুলস তৈরি করে, তা কার্যকর করার দায়িত্ব রাজ্য সরকারের।’’ বিরোধী দলনেতার এমন কৌশলী চালের পর দিনই স্পিকারের পাশ হওয়া বিলের কপি মোদী-শাহের মন্ত্রকে পাঠানোকে শাসকদলের পাল্টা কৌশল হিসাবে দেখছেন। কারণ, যে ভাবে শুভেন্দু আইন কার্যকর করার দায়িত্ব রাজ্য সরকারের ঘাড়ে চাপিয়েছেন। তাতে তৃণমূল পাল্টা চাল হিসাবে বিল অনুমোদনের দায়িত্ব কেন্দ্রের সরকারের উপর দিতে চাইছে। যে কারণে, মঙ্গলবারের আলোচনায় মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘‘বিরোধী দলনেতা রাজ্যপালকে বলুন বিলে তাড়াতাড়ি অনুমোদন দিতে।’’
আবার রাজ্য রাজনীতির অন্য অংশের মতে, স্পিকার একটি নিরপেক্ষ পদ। তাই এমন একটি পদের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা উচিত নয়। স্পিকার পেশায় আইনজীবী। তাই আরজি কর হাসপাতালে ঘটে যাওয়া ঘটনা নিয়ে তিনিও উদ্বিগ্ন। তাই ‘দ্য অপরাজিতা উইমেন অ্যান্ড চাইল্ড (ওয়েস্ট বেঙ্গল ক্রিমিনাল ল অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল ২০২৪’ যাতে দ্রুত আইনে পরিণত হয়, সে কথা মাথায় রেখেই তিনি বিলটি দেশের প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে পাঠিয়েছেন।