আইন সকলের জন্য সমান বলে নিজের কড়া অবস্থানের কথা বুঝিয়ে দিয়েছেন বিমান। ফাইল চিত্র।
ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের (আইএসএফ) চেয়ারম্যান তথা ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকির আসন্ন বাজেট অধিবেশনে যোগ দিতে পারবেন কি না স্পষ্ট নয়। বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় মঙ্গলবার জানান, আইন সকলের জন্য সমান। একজন বিধায়ক ও তাঁর দল রাস্তায় নেমে ভাঙচুর করবেন, আর বিধানসভার সদস্য হিসাবে তাঁকে নিরাপত্তা দিতে হবে, বিষয়টা এমন নয়।
কলকাতায় আইএসএফ কর্মী-সমর্থকরা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছিলেন। সেই ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছেন দলের চেয়ারম্যান তথা ভাঙড় বিধায়ক নওশাদ। এখন তিনি পুলিশি হেফাজতে। সেই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে স্পিকার বলেন, ‘‘আমাদের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় এমন অনেক বিধায়ক রয়েছেন যাঁরা আগের অধিবেশনে যোগ দিতে পারেননি। কার বিরুদ্ধে মামলার কতটা ওজন আছে সে বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারব না। যাঁরা আমাদের প্রশাসনে রয়েছেন তাঁরা এ বিষয়ে বলতে পারবেন।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমার মনে হয় এ ভাবে চাপ তৈরি করার কোনও মানে হয় না। একজন বিধায়ক ও তাঁর দল রাস্তায় নেমে ভাঙচুর করবে। জনজীবন স্তব্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা করবে, আর ধর্মের আড়ালে গিয়ে তিনি নিরাপত্তা চাইবেন, বা বিধানসভার সদস্য হিসেবে তাঁকে নিরাপত্তা দিতে হবে, এমনটা নয়। আইন সবার জন্য সমান হওয়া উচিত।’’
মঙ্গলবার বিধানসভাতেই ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল লেজিসলেটিভ স্টাফ রিক্রিয়েশন ক্লাব’-এর সরস্বতী পুজোর উদ্বোধন করেন তিনি। সেখানেই তাঁকে পুলিশের হেফাজতে থাকা বিধায়ক নওশাদের গ্রেফতারি এবং তাঁর পুলিশি হেফাজতে থাকা নিয়ে নিয়ে প্রশ্ন করা হয়।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার রাতে ভাঙড় বিধানসভা এলাকায় তৃণমূল ও আইএসএফের কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শনিবার সকাল থেকে উত্তপ্ত ছিল ভাঙড়। আবার শনিবারই ছিল আইএসএফের প্রতিষ্ঠা দিবস। সেই উপলক্ষে কলকাতার ধর্মতলায় একটি কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। শনিবার কলকাতার কর্মসূচির আগেই ভাঙড়ে সংঘর্ষে জড়ান তৃণমূল ও আইএসএফের কর্মীরা। ওই দিন কলকাতার কর্মসূচিতে যোগদানের আগে নিজের বিধানসভা এলাকায় গেলে আক্রান্ত হন বিধায়ক নওশাদ। তাঁর গাড়ি কোনও মতে এলাকার বাইরে বার করে দেয় পুলিশ। পরে এই ঘটনার প্রতিবাদে কলকাতার কর্মসূচির মঞ্চ থেকে সরব হন আইএসএফ নেতৃত্ব । ধর্মতলায় অবরোধে বসেন তাঁরা। কলকাতায় ফিরে সেই অবরোধে যোগ দেন নওশাদ। পুলিশ সেই অবরোধ তুলতে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি, ধস্তাধস্তি শুরু হয়। রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় ধর্মতলা চত্বর। গ্রেফতার করা হয় বিধায়ককে । আগামী ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তাঁদের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে ব্যাঙ্কশাল আদালত।
আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় বাজেট অধিবেশন শুরু হচ্ছে। জামিন না পেলে সেই অধিবেশনে যোগ দিতে পারবেন না নওশাদ। সেই সূত্রেই প্রশ্ন করা হয়েছিল স্পিকারকে। আইন সকলের জন্য সমান বলে নিজের কড়া অবস্থানের কথা বুঝিয়ে দিয়েছেন বিমান।