বাবুলের শপথে বিলম্ব হওয়ায় রাজ্যপালের ওপর ক্ষুব্ধ স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
বালিগঞ্জের বিধায়ক বাবুল সুপ্রিয়র শপথগ্রহণের বিষয়টি এখনও ঝুলে রয়েছে। তা নিয়ে তীব্র উষ্মা প্রকাশ করলেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। এই বিলম্বের জন্য রাজভবনের দিকেই আঙুল তুললেন তিনি। সোমবার রবীন্দ্র জয়ন্তী উপলক্ষে বিধানসভায় এসেছিলেন তিনি। সেখানেই বাবুলের শপথগ্রহণ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের উত্তরেই উষ্মা প্রকাশ করেছেন বিমান। তিনি বলেন, ‘‘এই বিষয়টা তো আমার হাতে নেই। এই বিষয়টি মহামহিম রাজ্যপালের হাতে। পরিষদীয় দফতরের হাতে। আমি এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করব না।’’
তবে এমন কথা বলেও স্পিকার আরও বলেন, ‘‘এই প্রশ্ন আমাকে না করে রাজ্যপালকে করা উচিত। আমি মনে করি এটা হয়ে যাওয়া উচিত ছিল। কেন যে হচ্ছে না, তা আমার কাছে বিস্ময়কর। আমাদের কাছে শপথ সংক্রান্ত যে চিঠিটি এসেছিল, তা আমরা ডেপুটি স্পিকারের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি। উনি তার উত্তরও দিয়েছেন রাজ্যপালের কাছে। এরপর রাজ্যপাল সিদ্ধান্ত নেবেন তিনি কী করবেন! বা করবেন না।’’
শপথ সংক্রান্ত জটিলতা কাটাতে সংবাদমাধ্যম মারফত রাজ্যপালকে পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। স্পিকার বলেন, ‘‘রাজ্যপাল নিজেই তো শপথগ্রহণ করাতে পারেন। বলার তো কিছুই নেই। বিধানসভা আসবেন, এসে শপথগ্রহণ করিয়ে যাবেন। এত বিতর্ক বাড়ানোর কোনও অবকাশ নেই। কাউকে পছন্দ হতেই পারে, আবার কাউকে পছন্দ নাও হতে পারে। তার জন্য কারও শপথগ্রহণ আটকে যাবে, তা বাঞ্ছনীয় নয়।’’ এই জটিলতা কাটাতে কী শেষ পর্যন্ত রাজ্যপালের সঙ্গে কথা বলবেন তিনি? এমন প্রশ্নের জবাবে বিমান বলেন, ‘‘এটা রাজ্যপালের নিজস্ব বাধ্যবাধকতা। আমার তাঁকে জানানোর কিছুই নেই।’’
৩০ এপ্রিল সন্ধ্যায় টুইট করে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় বাবুলের শপথের অনুমতি দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন। তিনি লেখেন, ‘ভারতের সংবিধানের ১৮৮ অনুচ্ছেদে উল্লিখিত আমার উপর ন্যস্ত ক্ষমতার ভিত্তিতে, ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার তরফে ১৬১ বালিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্র থেকে নির্বাচিত শ্রী বাবুল সুপ্রিয়কে শপথগ্রহণ করানোর দায়িত্ব দিলাম।’১৬ এপ্রিল বালিগঞ্জ বিধানসভার উপনির্বাচনে জয় পেলেও, গত প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে শপথ নিতে পারেননি বাবুল। তাই রাজ্যপালের এমন ঘোষণার পর স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন তিনি। কিন্তু ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমাকে যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তা আমি পালন করতে পারব না। কারণ রাজ্যপাল যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তা কার্যকর হলে, তাতে বিধানসভার স্পিকারের অপমান হবে। তাই আমার কাছে বাবুল সুপ্রিয়র শপথগ্রহণ করানোর চিঠি এলেই সবিনয়ে তা প্রত্যাখ্যান করব।’’
স্পিকারের দফতর শপথগ্রহণ সংক্রান্ত চিঠি ডেপুটি স্পিকারের দফতরে পাঠালে তার জবাব রাজভবনে পাঠিয়ে দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন আশিস। সেই থেকে ঝুলে রয়েছে বাবুলের শপথ। মঙ্গলবার বিধানসভার কাজকর্ম শুরু হলে এ বিষয়ে কিছু জানা সম্ভব বলেই জানিয়েছেন বিধানসভার এক আধিকারিক।