ইস্তফা দিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
ইস্তফা দিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। বিধানসভার মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ স্থায়ী সমিতির (স্ট্যান্ডিং কমিটি) চেয়ারম্যান পদ ছেড়ে দিলেন তিনি। দীর্ঘ দিন তিনি বিধানসভায় না যাওয়ায় ওই কমিটির বৈঠকই হচ্ছে না। গত শনিবার দুপুরে শোভনকে ফোন করেন স্বয়ং স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। অনুরোধ করেন বিধানসভায় আসতে এবং সক্রিয় হতে। শোভনও জানিয়েছিলেন, সময় পেলে দেখা করবেন। কিন্তু স্পিকারের সঙ্গে শেষ পর্যন্ত আর দেখা করলেন না বেহালা পূর্বের বিধায়ক। উল্টে, মঙ্গলবার দূত মারফৎ পাঠিয়ে দিলেন নিজের পদত্যাগপত্র।
বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে যে চিঠিটি শোভন চট্টোপাধ্যায় এ দিন পাঠিয়েছেন, সেটি খুবই সংক্ষিপ্ত। শোভন লিখেছেন, ‘‘অনিবার্য কারণবশত আমি মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ স্থায়ী সমিতির চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দিচ্ছি।’’
শনিবার স্পিকারের সঙ্গে ফোনে যখন কথোপকথন হয়েছিল বেহালা পূর্বের বিধায়কের, তখন কিন্তু তিনি আশ্বাস দিয়েছিলেন যে, সময় পেলে এই সপ্তাহে স্পিকারের সঙ্গে দেখা করবেন। শোভন নিজেও পরে স্বীকার করেছিলেন সে কথা। আনন্দবাজারকে তিনি বলেছিলেন, ‘‘হ্যাঁ উনি (স্পিকার) ফোন করেছিলেন। স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠকের বিষয়ে কথা বলেছেন। আমাকে বিধানসভায় যেতে বলেছেন। আমি বলেছি, সময় পেলে সামনের সপ্তাহে দেখা করব।’’ তবে নতুন সপ্তাহের শুরুতেই স্পষ্ট হয়ে গেল যে, সে ‘দেখা’ আপাতত আর হচ্ছে না।
আরও পড়ুন: কেন ভুগবে চলে যাও, বললেন কাশ্মীরিরাই
বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের কথোপকথনের পর কিন্তু বেশ কিছু জল্পনার জন্ম হয়েছিল রাজ্যের রাজনৈতিক শিবিরে। বিশেষত তৃণমূলের অন্দরে। ২০১৮ সালের ২০ নভেম্বর মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দেন শোভন। তার পর থেকে আর বিধানসভার পথ মাড়াননি। দলের কোনও কর্মসূচিতেও যোগ দেননি। এই ন’মাসে তৃণমূলের অনেকেই শোভনের মান ভাঙানোর বা তাঁকে আবার তৃণমূলের হয়ে সক্রিয় করে তোলার চেষ্টা করেছেন। কখনও সুব্রত বক্সি ফোন করেছেন, কখনও করেছেন ফিরহাদ হাকিম। কখনও পার্থ চট্টোপাধ্যায় শোভনের বাড়িতে হাজির হয়ে দীর্ঘ বৈঠক করেছেন। কিন্তু কোনও কিছুতেই চিঁড়ে ভেজেনি। এই ন’মাসে বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ই একমাত্র ব্যক্তি, যাঁকে শোভন আশ্বাস দিয়েছিলেন যে, সময় পেলে দেখা করবেন। তৃণমূলের একটি অংশে তাই আশার সঞ্চার হয়েছিল। স্পিকারের ফোন পাওয়ার পরে শোভন কিছুটা হলেও নরম হয়েছেন, তিনি ফের দলের হয়ে সক্রিয় হয়ে উঠতে পারেন— এমন গুঞ্জন তৈরি হয়েছিল।
আরও পড়ুন: সত্যই ধর্ম, যেন ভুলে যাচ্ছে দেশ
কিন্তু কলকাতার প্রাক্তন মেয়র তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী সে সম্ভাবনায় মঙ্গলবার জল ঢেলে দিলেন। বিধানসভার স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান পদে ইস্তফা দিয়ে তিনি স্পষ্ট করে দিলেন, তৃণমূলের হয়ে ময়দানে নামার আর কোনও ইচ্ছাই তাঁর নেই।