পুলিশকর্ত্রী ভারতী ঘোষ বহু দিন ধরেই তাঁকে ‘জঙ্গলমহলের মা’ বলেন। বিধানসভা ভোটে জিতে মন্ত্রী হওয়ার পরে মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেছিলেন, দিদি তাঁর মায়ের মতো। আরও এক ধাপ এগোলেন সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি আর ‘মায়ের মতো’ বলে কোনও জায়গা রাখলেন না। বিধানসভায় দাঁড়িয়ে সরাসরিই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘মা’ বললেন মন্ত্রী রাজীব!
রাত-বিরেতে ‘মা’-ই তাঁকে ফোন করেন। অঝোর বৃষ্টি হলেই মা খোঁজ নেন ছেলের! জেনে নেন, কোথাও জলভাসি হচ্ছে কি না। জলের তোড়ে নদীবাঁধ ভেঙে পড়েছে কি না, মানুষ বানভাসি কি না, জেনে মা ঝটিতি ছেলেকে বুঝিয়ে দেন, কী করণীয়! মা-ছেলের এই ‘রসায়ন’ আর গোপন রাখেননি রাজীব। বিধানসভায় সেচ দফতরের বাজেটের উপরে জবাবি বক্তৃতার শুরুতেই রাজীব শুক্রবার বললেন, ‘‘বাংলার মায়ের নাম যদি কিছু থাকে, আমার মায়ের নাম যদি কিছু হয়, তা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রতি মুহূর্তে তিনি খবর রাখেন। রাতে যদি কেউ এক জনও ফোন করেন, তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।’’ স্বাভাবিক ভাবেই এই বক্তব্য বিধানসভায় নথিভুক্তই থাকল।
দিনকয়েক ধরেই উত্তরবঙ্গ বানভাসি। কলকাতা-সহ বেশ কিছু এলাকায় এ দিন বৃষ্টি হয়েছে। উত্তরবঙ্গের বন্যা নিয়ে ‘মা’য়ের সঙ্গে এ দিনও সকাল থেকে তাঁর বেশ কয়েক বার ফোনে কথা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাজীব।
রাজ্যের সেচ পরিস্থিতি নিয়ে বিধানসভায় যখন বাজেট -বিতর্ক চলছে, তখন বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নেমেছে। দিনের শেষে সভায় তখন রাজীব ছাড়া আর মাত্র এক জন মন্ত্রী উপস্থিত— শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। শাসক দলের বেঞ্চে জনাতিরিশ। বিরোধী তারও অর্ধেক! অধিবেশনে উপস্থিতির এমন হাল দেখে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় আগামী দিনের জন্য শাসক ও বিরোধী, উভয় পক্ষকেই সতর্ক করে দিয়েছেন।