রত্না তাঁকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করছেন বলে এ বার অভিযোগ শোভনের।
বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় নন, তাঁকে খুনের পরিকল্পনা করছেন রত্না চট্টোপাধ্যায়। মাঝখান থেকে বৈশাখীকে বলির পাঁঠা করার ষড়যন্ত্র চলছে। বিবাহ বিচ্ছেদ নিয়ে টানাপড়েনের মধ্যে এ বার স্ত্রী-র বিরুদ্ধ এমনই অভিযোগ জানিয়ে কলকাতার পুলিশ কমিশনার সৌমেন মিত্রকে চিঠি লিখলেন শহরের প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। নিজের ‘প্রিয়জন’ বৈশাখী এবং তাঁর কন্যার জন্য নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে কমিশনারকে আর্জি জানিয়েছেন তিনি।
তবে শোভনের এই চিঠির প্রেক্ষিতে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তাঁর ছেলে সপ্তর্ষি। সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, ‘‘উনি এক জন স্বার্থপর মানুষ। নিজের প্রেমজীবন নিয়েই ব্যস্ত।’’
শুক্রবার পুলিশ কমিশনারকে দেওয়া চিঠিতে শোভন লেখেন, ‘বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর কন্যা রিলিনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন বোধ করছি। গত চার বছর ধরে আমার সঙ্গে রয়েছেন ওঁরা।’ শোভন এবং রত্নার মধ্যে এখনও আইনসিদ্ধ বিচ্ছেদ হয়নি। তবে চিঠিতে বৈশাখীকে ‘বিচ্ছিন্না’ বলেই উল্লেখ করেছেন শোভন। তাঁর অভিযোগ, ‘আগেও বৈশাখীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছেন। এখন আবার প্রকাশ্যেই উস্কানিমূলক মন্তব্য করছেন যে বৈশাখীকে বিদুতের খুঁটিতে বেঁধে মারা উচিত। জেল হেফাজতে থাকাকালীন আমার বর্তমান বাড়িও ঘেরাও করেন। এসএসকেএম-এ নিজের সহযোগী অভিজিৎ মৈত্র এবং সঞ্জয় রাউতকে আমার উপর হামলা করতেও পাঠিয়েছিলেন।’
রত্না তাঁকে যতই হেনস্থা করুন, তিনি বৈশাখী এবং তাঁর কন্যার পাশে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন শোভন। তাঁর বক্তব্য, ‘রত্না বলছেন, বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় আমাকে খুনের পরিকল্পনা করছেন। আসলে কিন্তু কত্না চট্টোপাধ্যায়ই সেই চেষ্টা করছেন। কারণ উনি জেনে গিয়েছেন যে আমি সমস্ত স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে করে দিয়েছি। তাই আপনারকে অনুরোধ, আমাকে এবং বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে যে কোনও ভাবে হেনস্থা করার ওঁর এই অশুভ অভিসন্ধি পূরণ হতে দেবেন না। আমার নিরাপত্তা ব্যবস্থা অবশ্যই পর্যালোচনা করে দেখা উচিত। কারণ আমি বুঝতে পারছি, আমাকে খুন করার চেষ্টা করবেন রত্না চট্টোপাধ্যায় এবং বৈশাখীকে বলির পাঁঠা বানাবেন।’
বেহালা পূর্বে বিধায়ক নির্বাচিত হওয়ার পর রত্না এখন ক্ষমতাশালীদের দলে পড়েন। তাই তাঁদের দুশ্চিন্তার যথেষ্ট কারণ রয়েছে বলে এর আগে দাবি করেছিলেন বৈশাখীও। শোভনের গলাতেও সেই সুর ধরা পড়েছেন। তাঁর কথায়, ‘রত্না চট্টোপাধ্যায় এখন বিধায়ক। এখন অনেক ক্ষমতা ও বল ওঁর। আমার এবং আমার প্রিয়জনদের ক্ষতিসাধন করতে জঘন্য রাস্তা ধরতে পারেন উনি। আমার এবং আনার প্রিয়জনদের জীবনে যাতে কোনও দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা না ঘটে, তার জন্য আপনার হস্তক্ষেপ চাইছি।’