পার্থর বাড়িতে শোভন ও বৈশাখী।
রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর এ বার জল্পনা বাড়িয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে হাজির শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল মহাসচিবের মাতৃবিয়োগ উপলক্ষ হলেও জোড়াফুল শিবিরে মুকুল রায়ের যোগদান পরবর্তী পরিস্থিতির বিচারে পার্থর বাড়িতে শোভন-বৈশাখীর ‘হঠাৎ’ আসা এবং ঘণ্টাখানেকেরও বেশি সময় ধরে ‘একান্ত’ বৈঠক যথেষ্টই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
সোমবার রাত ৮টা ২৫ মিনিট নাগাদ পার্থর নাকতলার বাড়িতে যান শোভন ও বৈশাখী। সৌজন্যমূলক সাক্ষাতে এসে পার্থর পা ছুঁয়ে প্রণাম করে বৈশাখী। রাজ্যের শিল্পমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন শোভনও। তার পরেই শোভন-বৈশাখীকে নিয়ে বাড়ির ভিতরে চলে যান পার্থ।
সোমবার পার্থর বাড়ি থেকে বেরিয়ে বৈশাখী বলেন, ‘‘কোনও উদ্দেশ্য নিয়ে এখানে আসিনি। পার্থবাবুর মা মারা গিয়েছেন, তাই দেখা করতে এসেছি।’’ তার পরই ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করে বলেন, ‘‘মমতাদির চোখে শোভনের জন্য যে জায়গা ছিল, আর শোভনের নজরে মমতাদি যে স্থান দখল করতেন, তা এখনও আছে। নারদ-কাণ্ডে বাকি তিন নেতা-মন্ত্রীর জন্য দিদির মধ্যে যে উদ্বেগ দেখা গিয়েছিল, একই উদ্বেগ ছিল শোভনের জন্য। শোভন যে দলে ভালবাসা পাবে, সেই দলেই যাবে। বিজেপি-অধ্যায় শেষ হয়েছে।’’
পার্থর মাতৃবিয়োগের খবর পেয়ে রবিবারই এসেছিলেন অধুনা তৃণমূলের সর্বভারতীয় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সৌজন্য সাক্ষাতে এসেছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা ‘বেসুরো’ বিজেপি নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ও। সোমবার সকালে এসেছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। তার পরই এই ভাবে শোভন ও বৈশাখীর চলে আসায় ফের জল্পনা শুরু করেছে।
জল্পনার কারণ- প্রায় দু’বছর পর পার্থর সঙ্গে বৈঠক করলেন শোভন। সোমবারের বৈঠকের পর শোভন বলেন, ‘‘২০১৭ সালে বৌদি (পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের স্ত্রী বাবলি চট্টোপাধ্যায়) যখন মারা গিয়েছিলেন, তখনও এসেছিলাম। এ বারও তাঁর মায়ের মৃত্যুতে ব্যথিত হয়ে দেখা করতে এসেছি। আমি তো পার্থদার পরিবারেরই লোক।’’
২০১৯ সালে শোভনের বিজেপি-তে যোগদানের আগে তাঁর গোলপার্কের বাড়িতে গিয়ে অনেক রাত পর্যন্ত বৈঠক করে এসেছিলেন পার্থ। তার অব্যবহিত পরেই শোভন ও বৈশাখীর পদ্মে যোগ এবং বিধানসভা ভোটের কয়েক দিন আগে বিজেপি ছেড়ে বেরিয়ে আসায় পর জল অনেকদূর গড়িয়েছে। সম্প্রতি শোভন-সহ রাজ্যের চার নেতা-মন্ত্রীকে সিবিআই গ্রেফতার করার পর নিজাম প্যালেসে মুখ্যমন্ত্রীর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতি নিয়ে ঘনিষ্ঠমহলে শোভন ও বৈশাখীর ‘কৃতজ্ঞতা’ স্বীকারের কথা শোনা গিয়েছে । রবিবারের ফেসবুকে লাইভেও তাঁরা বুঝিয়ে দিয়েছেন বিজেপি এখন অতীত-অধ্যায়।