Ramnagar

সিগারেটের ছেঁকা ছেলের গায়ে, পরে মাথায় মেরে হাত-পা ভেঙে জঙ্গলে! রামনগরে ধৃত মা, সৎবাবা

স্থানীয় সূত্রে খবর, শিশুর উপর অত্যাচারের খবর এলাকায় চাউর হতেই অভিযুক্ত মা এবং সৎবাবা শুকদেব মণ্ডলকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেন পড়শিরা।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০২৫ ১৫:৩৩
Share:

শুকদেব মণ্ডল এবং মামনি গিরি। —নিজস্ব চিত্র।

দ্বিতীয় বিয়ে। নতুন সংসার। তাই প্রথম পক্ষের সন্তানকে আর সহ্য করতে পারছিলেন না মা! রাগে তার উপর চলল অকথ্য অত্যাচার। প্রথমে ছ’বছরের ওই শিশুর হাত-পা ভেঙে তার গায়ে বিড়ি-সিগারেটের ছেঁকা দেওয়া হয়। মৃত্যু নিশ্চিত করতে পরে ভারী কিছু দিয়ে মাথার আঘাত। অত্যাচারে শিশুটি জ্ঞান হারালে রাতের অন্ধকারে তাকে বাড়ির অদূরে একটি জঙ্গলে ফেলে রেখে আসাও হয়েছিল। পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগরে এই অভিযোগকে কেন্দ্র করে শোরগোল পড়তেই ওই শিশুর মা ও সৎবাবাকে গ্রেফতার করল পুলিশ।

Advertisement

রামনগর থানার উত্তর হলদিয়া গ্রামে খয়রান্ডা এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, শিশুর উপর অত্যাচারের খবর এলাকায় চাউর হতেই অভিযুক্ত মা এবং সৎবাবা শুকদেব মণ্ডলকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেন পড়শিরা। স্থানীয় একটি চাইল্ড কেয়ার হোমের তত্ত্বাবধানে শিশুটির চিকিৎসা শুরু হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মামনির প্রথম স্বামী কার্তিক গিরির বছর পাঁচেক আগে মৃত্যু হয়। এর পর উত্তর হলদিয়া গ্রামে ছেলেকে নিয়ে থাকতেন মামনি। আড়াই মাস আগে শুকদেবের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। অভিযোগ, দ্বিতীয় বিয়ের পর থেকেই আর প্রথম পক্ষের সন্তানকে সহ্য করতে পারছিলেন না মামনি। তখন থেকে অত্যাচার চলত। সোমবার রাতে তা মাত্রা ছাড়িয়েছে বলে দাবি স্থানীয়দের।

Advertisement

পড়শিদের দাবি, মারধরে ছেলে সংজ্ঞাহীন হওয়ার পর তাকে বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে জঙ্গলে ফেলে রেখে এসেছিলেন মামনি এবং শুকদেব। তাঁরা ভেবেছিলেন, শীতের রাতে এমনিই হয়তো মারা যাবে ছেলে। কিন্তু মঙ্গলবার ভোরে ওই শিশুর জ্ঞান ফেরে। সে উঠে জঙ্গলের পাশে একটি বাড়িতে জল খেতে যায়। তার পরেই বিষয়টি জানাজানি হয়। সেখানেও ফের জ্ঞান হারায় শিশুটি। এর পর স্থানীয়েরাই তাকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যান। খবর দেওয়া হয় পুলিশে।

পুলিশ সূত্রে খবর, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় হাসপাতালে শিশুটির জ্ঞান ফেরে। এর পরেই সে সব কিছু জানায় পুলিশকে। তদন্তকারীরা জানতে পারেন, শিশুটির হাত-পা ভাঙা হয়েছে। গায়ে সিগারেটের ছেঁকা। শরীর জুড়ে আঘাতের চিহ্ন। তারই মধ্যে মামনি ও শুকদেবকে পাকড়াও করেন গ্রামবাসীরা। অভিযোগ, তাঁদের মারধরও করা হয়। এর পর পুলিশ এলে তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয় দু’জনকে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার ধৃতদের কাঁথি মহকুমা আদালতে হাজির করানো হবে। যদিও অভিযুক্তদের দাবি, তাঁরা অবাধ্য শিশুকে মারধর করলেও প্রাণে মেরে ফেলার চেষ্টা করেননি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement