প্রণব থেকে মমতা, অধীর থেকে দিলীপ— সোমেন মিত্রের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ সকলের। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
দক্ষিণ কলকাতার একটি নার্সিং হোমে বুধবার রাতে মৃত্যু হয় প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রের। তাঁর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমেছে রাজনৈতিক মহলে। সহকর্মী হোক বা বিরোধী, সোমেন মিত্রের রাজনৈতিক জীবন নিয়ে স্মৃতিচারণা করেছেন রাজ্য তথা দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।
সোমেন মিত্রের মত্যুতে গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি লিখেছেন, ‘‘বিধায়ক, সাংসদ এবং পশ্চিমবঙ্গের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হিসাবে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। তাঁর মানসিকতা ছিল ইস্পাতকঠিন। তাঁর দৃষ্টিভঙ্গী ছিল বৃহত্তর।’’
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টুইট করে সোমেন মিত্রের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ‘‘প্রাক্তন সাংসদ ও পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি সোমেন মিত্রের মৃত্যুর খবরে আমি শোকাহত। তাঁর পরিবার, অনুগামী ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।’’ জানা গিয়েছে, দিন দুয়েক আগে ফোন করে সোমেন মিত্রের শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। নিজের দলের বিশ্বস্ত সেনানীকে হারিয়ে শোকপ্রকাশ করেছেন রাহুল গাঁধীও। সোমেন মিত্রের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন তিনি। কঠিন সময়ে গাঁধী পরিবারের পাশে যে ভাবে দাঁড়িয়েছেন সোমেন, সে কথাও টুইটে স্মরণ করেছেন রাহুল। পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ও সোমেন মিত্রের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, বাংলার রাজনীতিতে তাঁর অবদান চিরস্মরণীয় থাকবে।
সোমেন মিত্রকে নিজের রাজনৈতিক ‘মেন্টর’ হিসাবে চিহ্নিত করেছেন কংগ্রেস সাংসদ অধীররঞ্জন চৌধুরী। তাঁর মৃত্যুতে শোকাহত অধীর বলেছেন, ‘‘সোমেন মিত্র আর নেই এটা ভাবতে পারছি না, বাংলার একটা অধ্যায় সমাপ্ত হলো। সংগ্রাম করে, প্রতিকূলতার মোকাবিলা করে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি আমার রাজনৈতিক অভিভাবক। আমাকে জনপ্রতিনিধি করার মূল কারিগর সোমেনদাকে হারিয়ে আমি দুঃখে কাতর ও বেদনাহত হলাম। তাঁর অভাব সবার মধ্যে অনুভূত হবে।’’ সোমেন মিত্রের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন তাঁর অপর সহকর্মী প্রদীপ ভট্টাচার্য। তিনি বলেছেন, ‘‘দলের তো বটেই, বাংলার রাজনীতিতে বিশাল ক্ষতি। পরশু দিন আমার সঙ্গে কথা হয়েছিল। ব্যালেন্স পলিটিক্স বলতে যা বোঝায় সেটাই সারা জীবন করেছেন তিনি। রাজনীতিতে ব্যক্তি আক্রমণে বিশ্বাস করতেন না। চিরকালই আদর্শের ভিত্তিতে লড়াই করেছেন।’’
আরও পড়ুন: কংগ্রেস রাজনীতিতে এক অধ্যায়ের অবসান, প্রয়াত সোমেন মিত্র
পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষও শ্রদ্ধা জানিয়েছেন সোমেন মিত্রের প্রতি। তিনি বলেছেন, ‘‘বহু দিনের রাজনীতিক। পশ্চিমবঙ্গের যে রাজনৈতিক পরম্পরা, তা ওঁর মতো মানুষরাই বহন করেছেন। সে দিক থেকে দেখলে রাজনীতির এক অধ্যায় শেষ হল। আমি ওঁর আত্মার সদ্গতি কামনা করি।’’
এ দিন সকাল সাড়ে ন’টা নাগাদ হাসপাতাল থেকে তাঁর দেহ প্রদেশ কংগ্রেসের সদর দফতর বিধান ভবনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কিছু ক্ষণ রাখা হয় তাঁর দেহ। জানানো হয় শেষ শ্রদ্ধা।
আরও পড়ুন: হাসপাতালে শ্যামল, অনাদি