ট্রেনের ধাক্কায় জখম, পাশে স্থানীয়রা

মুর্শিদাবাদের বহরমপুরের বাসিন্দা, বছর ছাব্বিশের শঙ্করচন্দ্র রায় বৃহস্পতিবার চারমহুলার বাড়ি থেকে বেরোন। শুক্রবার রাত ৯টা নাগাদ কাটোয়ার বেলতলার কাছ হাওড়া-কাটোয়া লোকাল থেকে পড়ে যান তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাটোয়া ও বহরমপুর শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০১:২৬
Share:

জখম: হাসপাতালে শঙ্কর। নিজস্ব চিত্র

রেললাইনে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়েছিলেন যুবক। দুই পা গুরুতর জখম। হাসপাতালে পৌঁছনো, রক্তের বন্দোবস্ত, এমনকী, উপযুক্ত চিকিৎসার জন্য প্রশাসনের দ্বারস্থ হওয়া— পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ায় রাতভর আহতের পাশে থাকলেন স্থানীয় কিছু বাসিন্দা।

Advertisement

মুর্শিদাবাদের বহরমপুরের বাসিন্দা, বছর ছাব্বিশের শঙ্করচন্দ্র রায় বৃহস্পতিবার চারমহুলার বাড়ি থেকে বেরোন। শুক্রবার রাত ৯টা নাগাদ কাটোয়ার বেলতলার কাছ হাওড়া-কাটোয়া লোকাল থেকে পড়ে যান তিনি। কাটোয়া হাসপাতাল থেকে তাঁকে সরানো হয় বর্ধমান মেডিক্যালে। ট্রেনের চাকায় ক্ষতিগ্রস্ত তাঁর দুই পায়ে শনিবার অস্ত্রোপচার হয়। তাঁর অবস্থা এখন স্থিতিশীল।

ট্রেন থেকে পড়ে যাওয়ার পরেই শঙ্করকে কাটোয়া হাসপাতালে পৌঁছে দেন এলাকার কয়েকজন। তখন কোনও মতে শুধু নিজের নাম-ঠিকানা বলতে পারছিলেন শঙ্কর। অভিযোগ, তাঁকে হাসপাতালের পুরুষ বিভাগের বাইরে ঘণ্টা দু’য়েক শুইয়ে রাখা হয়। যন্ত্রণায় কাতরালেও চিকিৎসা হয়নি। খবর পেয়ে হাসপাতালে পৌঁছন আশপাশের বাসিন্দা যুবক ইন্দ্রজিৎ ঘোষ, দীপ্তিমান দাসেরা।

Advertisement

কাটোয়া পুরসভার কর্মী ইন্দ্রজিৎবাবু, ব্লক অফিসের কর্মী দীপ্তিমানবাবুরা জানান, রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ চিকিৎসক তাপস সরকার আহত যুবককে স্যালাইন দেওয়ার নির্দেশ দেন। শঙ্করকে বর্ধমান মেডিক্যালে সরাতেও বলা হয়। কিন্তু কোনও পরিজন না থাকায় ব্যবস্থা করা যাচ্ছিল না। এ কথা ওই যুবকেরা মহকুমাশাসক (কাটোয়া) সৌমেন পালকে জানান। মহকুমাশাসক হাসপাতালের সুপারকে ফোন করে বিষয়টি দেখতে বলেন।

এরই মধ্যে এক ডাক্তার জানান, আহতকে রক্ত দেওয়া প্রয়োজন। হাসপাতালে প্রয়োজনীয় গ্রুপের রক্ত মেলেনি। গ্রুপ মিলে যাওয়ায় দীপ্তিমানবাবুই রক্ত দেন। রাত ২টো নাগাদ ফের চিকিৎসক তাপসবাবু আসেন। এর পরেই শঙ্করকে হাসপাতালের দু’জন কর্মীর সাহায্যে বর্ধমান মেডিক্যালে পাঠানো হয়।

শঙ্করের পাশে দাঁড়ানোর জন্য কৃতিত্ব নিতে নারাজ দীপ্তিমানবাবুদের বক্তব্য, ‘‘হাসপাতাল আর একটু তৎপর হলে আহতকে এত যন্ত্রণা সইতে হতো না।’’ হাসপাতাল সুপার রতন শাসমল এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে চাননি। হাসপাতালের তরফে গাফিলতির অভিযোগ মানেননি চিকিৎসক তাপসবাবু। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রণব রায়ও বলেন, ‘‘চিকিৎসা ঠিক সময়েই হয়েছে।’’

খবর পেয়ে এ দিন বিকেলে বর্ধমানের উদ্দেশে রওনা দেন শঙ্করের বাড়ির লোকজন। শঙ্করের ভাই চন্দন রায় বলেন, ‘‘দাদার জন্য কাটোয়ার মানুষ যা করেছেন, আমরা কৃতজ্ঞ।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement