ফাইল চিত্র।
বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন নেই। কিন্তু সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিশনে পদ্ধতিগত ত্রুটির প্রশ্ন মেনে নিলেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক স্বয়ং সীতারাম ইয়েচুরিই।
তরুণ সাংসদকে বহিষ্কারের পরে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রকাশ করা দ্বিতীয় বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, ঋতব্রতের বিরুদ্ধে ‘মহিলা সংক্রান্ত বিষয়ে নৈতিক অধঃপতনে’র অভিযোগ ছিল। কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে চার দফা অভিযোগের তদন্ত করেছিল মহম্মদ সেলিম, মদন ঘোষ ও মৃদুল দে-কে নিয়ে গঠিত তিন সদস্যের কমিশন। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরে ‘বিশাখা নির্দেশিকা’ মেনে মহিলা সংক্রান্ত কোনও অভিযোগের তদন্তকারীদের মধ্যে মহিলা সদস্য থাকা আবশ্যক। সিপিএমের কমিশনেরও কি সেই নীতি মানা উচিত ছিল না? কলকাতায় বুধবার এই প্রশ্নের উত্তরে ইয়েচুরি বলেন, ‘‘আমরা নীতি ও আদর্শ মেনে চলার কথাই বলি। বিভিন্ন ক্ষেত্রে মহিলাদের স্থান দেওয়ার পক্ষেও আমরা সওয়াল করেছি। এই কমিশনের ক্ষেত্রেও বিশাখা গাইডলাইন মানা উচিত ছিল। কমিশনে মহিলা সদস্য থাকলে ভাল হতো।’’ তবে কমিশন কাদের নিয়ে গঠিত হবে, সেই সিদ্ধান্তের ভার রাজ্য দলের ছিল বলেও ইয়েচুরি জানিয়েছেন।
তদন্ত কমিশনের মনোভাব নিয়ে প্রকাশ্যেই প্রশ্ন তুলেছেন ঋতব্রত। টিভি চ্যানেলের সাক্ষাৎকারে সেই প্রশ্ন তুলতে গিয়েই দলের তিন শীর্ষ নেতাকে চাঁছাছোলা আক্রমণ করেছিলেন তিনি এবং তার জেরেই বহিষ্কার। কিন্তু ঋতব্রতের তোপের দৌলতেই ঘটনাটি নিয়ে বিতর্ক এখনও বহাল। ইয়েচুরি অবশ্য বলেছেন, ‘‘মামলা তো নতুন করে চালু করা সম্ভব নয়! আর এখন যা যা অভিযোগ শোনা যাচ্ছে, সবই কমিশনের রিপোর্টের পরে এসেছে। কমিশন তো সাংসদকে চার বার শুনানিতে ডেকে তাঁর বক্তব্য শুনেছে।’’ ঋতব্রতের পরবর্তী অভিযোগ নিয়ে প্রকাশ্যে উৎসাহ না দেখালেও ইয়েচুরি এ দিন কমিশনে মহিলা সদস্য না রাখা নিয়ে যা বলে গিয়েছেন, তা আলিমু্দ্দিনের অস্বস্তিই বাড়িয়েছে। ঘরোয়া আলোচনায় দলের রাজ্য নেতাদের কেউ কেউ মানছেন, তাঁরা এই দিকটা মাথাতেই আনেননি!
ইয়েচুরির বক্তব্য জেনে ঋতব্রতও কটাক্ষ করেছেন, ‘‘আমি তো বারবার বলছি, ওটা ক্যাঙ্গারু কমিশন ছিল! তারা আগে থেকেই ফয়সালা নিয়ে রেখেছিল। এখন সাধারণ সম্পাদকও বলছেন, কমিশনে মহিলা সদস্য থাকা উচিত ছিল।’’