এই কলকাতাতেই কেন্দ্রীয় কমিটির ভোটাভুটিতে খারিজ হয়ে গিয়েছিল তাঁর বৃহত্তর সমঝোতার লাইন। সেই কলকাতায় এসেই দলের রাজ্য সম্মেলনের আগে সব ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিকে একজোট করে এগোনোর ডাক দিলেন সীতারাম ইয়েচুরি। বাংলার সিপিএম কর্মীদের প্রতি দলের সাধারণ সম্পাদকের কৌশলী বার্তা, কেন্দ্রীয় কমিটির খসড়া প্রতিবেদনের উপরে যেন যত বেশি সম্ভব সংশোধনী প্রস্তাব জমা পড়ে এই রাজ্য থেকে!
বরানগরের চটকলে কাজ শুরু করে সিপিএমে যোগ দিয়ে যিনি পলিটব্যুরোর সদস্য হয়েছিলেন এবং আমৃত্যু সাধারণ জীবনযাপনে অভ্যস্ত ছিলেন, সেই মহম্মদ আমিনের স্মরণসভায় মঙ্গলবার প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবনে প্রধান বক্তা ছিলেন ইয়েচুরি। পুরনো কাহিনি টেনে সেখানেই ইয়েচুরি বলেন, তাঁরা যখন পলিটব্যুরোয় নতুন গিয়েছিলেন, সেই সময়ে বাংলার জ্যোতি বসু এবং পঞ্জাবের হরকিষেণ সিংহ সুরজিৎ তাঁদের বোঝানোর চেষ্টা করতেন যে, সাম্প্রদায়িকতার বিপদকে খাটো করে দেখা উচিত হবে না। আমিনও আজীবন সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে যোদ্ধা ছিলেন। সেই সূত্রেই ইয়েচুরি উল্লেখ করেছেন, কেন্দ্রীয় কমিটির তৈরি করা খসড়া প্রতিবেদনে মেনে নেওয়া হয়েছে যে, বিজেপি-কে রুখতে যথাসম্ভব বেশি সমর্থন এক জায়গায় আনতে হবে। আর কংগ্রেসের নাম না করেই বাংলার নেতা-কর্মীদের প্রতি ইয়েচুরির বক্তব্য, ‘‘এখন আর শুধু তৃণমূলের মারই এখানে একমাত্র আতঙ্ক নয়। বিজেপি-র সঙ্গে তৃণমূলের প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক সাম্প্রদায়িকতার বিপদ আটকাতে হবে। তার জন্য তৃণমূল, বিজেপি ছাড়া সব ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক শক্তিকে এক জায়গায় কী ভাবে আনতে হবে, সেই লক্ষ্যেই রাজ্য সম্মেলনে আলোচনা করুন। সম্মেলনের আগে এর চেয়ে বেশি আমার কিছু বলা উচিত নয়!’’
আমিনের লড়াকু জীবন দলের কর্মীদের হতাশার সময়ে অনুপ্রাণিত করবে বলে এ দিন মন্তব্য করেছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। আর বিমান বসু বলেছেন, ‘‘আমিনসাহেব কখনও নিজের কাজের বিজ্ঞাপন দিতেন না। এটা বিরল দৃষ্টান্ত।’’