মেয়ে ধানসিড়ির তখন ৩ বছর। রং-পেন্সিলে রাঙিয়ে দিয়েছিল বাবা নচিকেতাকে।
তাঁর কলমে বসন্ত এসেছে নানা ভাবে। সেই বসন্তকে সুরের রঙে রাঙিয়েওছেন তিনি বহু বার। রুদ্রপলাশকে মনে করিয়ে কখনও গেয়ে উঠেছেন, ‘এই আগুনে হাত রাখো, আর ফাগুনে মুখ ঢাকো...’। কখনও লিখেছেন, ‘পৃথিবীকে যদি রাঙাতে না পারিস, আমাকেই রাঙা, পৃথিবী ভেবে...’। কিন্তু, বসন্ত দিনে তাঁকে কখনও পথে নামতে দেখা যায়নি। এ বারের দোলে কিন্তু রাজপথে নেমে রীতিমতো রঙের উৎসবে মাতবেন নচিকেতা। নগরের পথে পথে নাচ-গান এবং সঙ্গে অবশ্যই আবির। এ বারই প্রথম।
কিন্তু হঠাৎ আবির নিয়ে পথে কেন নামছেন? নচিকেতার জবাব: ‘‘কলকাতার রাজপথ বহু দিন ধরে নানান পতাকার রং দেখছে। তাই একটু আবিরের রং নিয়ে পথে নামছি।’’
তবে, সেই পথে নামা দোলের দিন নয়। ঠিক হয়েছে দোলের আগের দিন, অর্থাৎ ৮ মার্চ, রবিবার শিল্পীর বেলগাছিয়ার বাড়ির সামনে থেকে বার হবে ওই ‘দোল যাত্রা’। তার পর ঘুরে বেড়ানো শহরের পথে পথে, অলিতে গলিতে। তবে রাজপথে একা নচিকেতা নন, থাকবে ‘আগুনপাখি’ এবং ‘শৈল্পিক ডানা’।
আরও পড়ুন: ‘ডিডিএলজে’ থেকে ‘শোলে’, সঙ্গে ক্রিকেট, ভাঙরা— ট্রাম্প মজে রইলেন পপুলার কালচারে
নচিকেতার স্ত্রী নৃত্যশিল্পী সুমিতা চক্রবর্তী এই ‘দোল যাত্রা’র প্রধান উদ্যোক্তা। শৈল্পিক ডানা ডান্স অ্যাকাডেমির কর্ণধারও তিনি। বসন্ত উৎসবের এই উদ্যোগ প্রসঙ্গে সুমিতা বললেন, ‘‘দোলকে একটু অন্য রকম ভাবে পালন করার একটা ইচ্ছে নচিকেতা এবং আমার অনেক দিন ধরেই ছিল। কিন্তু, নানা কারণে হয়ে উঠছিল না। এ বার যখন কথা উঠল, তখন নচিকেতা রাজি হয়ে গেল আমাদের সঙ্গে পথে নামতে। ফলে, উদ্যাপনের তোড়জোড় শুরু হয়ে গেল। বলা হল আগুনপাখিকে। এখন শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে।’’
আরও পড়ুন: চার মহিলার শরীরের রং দিচ্ছে বিশেষ বার্তা, ভিডিয়ো শেয়ার করলেন বিদ্যা বালন
নচিকেতার সেই অর্থে কোনও ফ্যান ক্লাব নেই। আছে ফ্রেন্ডস ফোরাম— আগুনপাখি। তাদের তরফে সুনন্দ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আগুনপাখি তো নচিকেতা নিজেই। ফলে, নচিদা পথে নামবে আর আবির নিয়ে আমরা থাকব না, তা কি হয়? আমরা সকলে থাকছি ওই দিন। ডান্স অ্যাকাডেমির সদস্যেরা নাচ করবে। আর আগুনপাখির গান। সঙ্গে অবশ্যই আবির এবং নচিকেতা।’’
রাজপথে কি তবে নতুন কোনও গান শোনা যাবে নচিকেতার গলায়? সবটা ভাঙতে চাইলেন না। তিনি শুধু বললেন, ‘‘রং নিয়ে একটা নতুন গান বেঁধেছি। ওই দিন শোনাব।’’
ছবি: আনন্দবাজার আর্কাইভ থেকে।