মা-বাবার সঙ্গে জুনেইনা পারভিন। —নিজস্ব চিত্র।
মাধ্যমিক পরীক্ষায় ভাল ফলের আশা ছিল বটে। তবে মেধাতালিকায় একেবারে অষ্টম স্থানে নিজের নাম থাকবে, এমনটা ভাবতেও পারেনি শিলিগুড়ির জুনেইনা পারভিন। শুক্রবার তা-ই হয়েছে। মাধ্যমিকে নিজের নম্বর দেখে এখনও ঘোর কাটছে না তার।
শিলিগুড়র সারদা শিশুতীর্থ স্কুলের ছাত্রী জুনেইনার প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৬। মোট ৭০০ নম্বরের মধ্যে পেয়েছে ৯৮ শতাংশ। স্বাভাবিক ভাবেই শিলিগুড়ির ৪ নম্বর ওয়ার্ডে তার বাড়িতে খুশির জোয়ার। খুশির ডগমগ হয়ে জুনেইনা বলে, ‘‘আনুমানিক ৯০ শতাংশের উপরে পাব ভেবেছিলাম৷ এতটা ভাল ফল কখনওই আশা করিনি।’’
কোভিডের সংক্রমণের কারণে স্কুলে চৌহদ্দিতে ঢোকা বন্ধ ছিল দীর্ঘ দিন। তাতে পড়াশোনায় অসুবিধা হয়নি। আনন্দবাজার অনলাইনের কাছে জুনেইনার সাফ কথা, ‘‘বছরের অর্ধেকটাই তো অনলাইনে পড়াশোনা করতে হয়েছে। বাকি সময় অফলাইনে পড়াশোনা চলত৷ তাতে খানিকটা অসুবিধে হত ঠিকই৷ তবে দিনে ছ’সাত ঘণ্টা পড়াশোনা করতাম। ৯০ শতাংশের উপরে নম্বর নম্বর পাব ভেবেছিলাম। কিন্তু এমন ফল হবে তা ভাবিনি।’’ এখন থেকেই নিজের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করে ফেলেছে জুনেইনা। তাঁর কথায়, ‘‘ইচ্ছে রয়েছে ডাক্তার হওয়ার।’’ তবে ইচ্ছে থাকলেই কি উপায় হবে?
শিলিগুড়ির কুমারটুলি এলাকায় এঁদো গলি পেরিয়ে জুনেইনাদের বাড়ি। তাতে এখনও পড়েনি পাকা ছাদ। টিনের চালের ঘরে দিন কাটে তাদের। জুনেইনার বাবা জাকির হুসেন পেশায় ট্যুর অপারেটর। আর্থিক টানাটানি লেগেই রয়েছে সংসারে। কষ্টের মধ্যে বেড়ে উঠেছে মেয়ে। তবে মেয়ের স্বপ্নপূরণে যে ভাবেই হোক, খরচ জোগানোর চেষ্টা করবেন বলে পণ করেছেন মা-বাবা। জুনেইনার মা লিপি বানু বলেন, ‘‘মেয়ের এই রেজাল্ট দেখে খুবই ভাল লাগছে। ভবিষ্যতে ডাক্তার হতে চায় ও। টাকাপয়সার সমস্যা হলেও সেই স্বপ্নপূরণ বাধা আসবে না!’’
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।