কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামের সভায় গৌতম দেব। —নিজস্ব চিত্র
অগস্ট মাসেই শিলিগুড়িতে অশোক মডে়লকে ধূলিসাৎ করে এই জেলাতে তৃণমূলের পতাকা উঠবে বলে দলের ছাত্র সংগঠনের সভায় পর্যটন মন্ত্রী তথা তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা সভাপতি গৌতম দেব জানিয়ে দিলেন। বৃহস্পতিবার কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে ওই সভার পর তা নিয়ে জেলার রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন শুরু হয়েছে।
শিলিগুড়ি পুরসভা এবং মহকুমা পরিষদের ভোটে বামেদের কাছে পর্যুদস্ত হতে হয়েছে শাসক দলকে। বিধানসভা নির্বাচনে মালদহ এবং দার্জিলিং জেলায় তৃণমূলের ভরাডুবি হয়েছে। তা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে জেলা নেতৃত্বকে।
পুরভোটে শাসক দলের ভোট লুটের চেষ্টার হাত থেকে নিজেদের ভোট রক্ষা করার ডাক দিয়ে বিরোধীদের নিয়ে জোটের ডাক দেয় অশোক ভট্টাচার্য। রাজ্যে তা শিলিগুড়ি মডেল তথা অশোক মডেল বলে আলোচিত হয়। এমনকী এ দিনও ছাত্র সংগঠনের উত্তরবঙ্গের চার জেলা নিয়ে কভেনশনে রাজ্য যুব তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায়, টিএমসিপি’র রাজ্য নেত্রী জয়া দত্তরাও বিধানসভায় দার্জিলিং জেলায় একটিও আসন না মেলার বিষয়টি তোলেন। এ দিন বক্তব্য রাখতে গিয়ে পর্যটন মন্ত্রীও জানান, বিধানসভা ভোটে দলের ভাল ফল হলেও তাতে দুটি জেলার অবদান নেই। তাই সংগঠন ঢেলে সাজাবার চেষ্টা হচ্ছে। আগামীতে কোনও ভোটে তৃণমূলের ঘাস ফুলকে সবার উপরে তুলে ধরতে হবে।
এর পরেই তিনি বলেন, ‘‘অগস্ট মাস বিপ্লবের মাস। এই মাসে শিলিগুড়ি মডেলকে ধূলিসাৎ করে ওই জেলাতে তৃণমূলের পতাকা উঠবে। একটা মৌলিক পরিবর্তন হবে। এই জেলায় তৃণমূলের জয়যাত্রা শুরু হবে।’’
যা শুনে শিলিগুড়ির মেয়র অশোক ভট্টাচার্যের প্রতিক্রিয়া, ‘‘তৃণমূলের জবরদখল মডেলকে হারিয়েই আমরা এসেছি। শিলিগুড়িতে এখনই পরিবর্তনের কোনও সম্ভবনা নেই। পরের বিধানসভা ভোট ২০১২১ সালে। পুরভোট এবং মহকুমা পরিষদের ভোট ২০২০ সালে। শিলিগুড়িতে রাজনৈতিক পরিবর্তনের জন্য ওই সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।’’ তিনি জানান, তৃণমূলকে তিনি চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছেন। তাঁরা পুরসভা এবং মহকুমা পরিষদে অনাস্থা আনুক। পুরসভায় তাদের ১৭ জনকে একসঙ্গে রাখতে পারবেন কি না সেটাই তৃণমূল দেখুক। ৪৭ আসনের শিলিগুড়ি পুরসভা। মেয়রের কথায়, কংগ্রেসের সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন। তাঁদের চারজন কাউন্সিলর নিজেদের অবস্থানেই আছেন। তাঁর মতে বিজেপি’র অবস্থানও তাই। বামেদের ২৩ জনের এক জনকেও শাসক দলে যাবেন না। নির্দল কাউন্সিলর যাঁর সমর্থনে পুরবোর্ড গড়েছে বামেরা, যিনি গুরুতর অসুস্থ রয়েছেন তিনিও একই অবস্থানে রয়েছেন বলে মেয়রের দাবি।
তৃণমূলের তরফে জানানো হয়, ইতিমধ্যেই ফাঁসিদেওয়া পঞ্চায়েত সমিতিতে বিরোধী সদস্যদের অনেকে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। পুরসভার কংগ্রেস পরিষদীয় দলের নেতা সুজয় ঘটক বলেন, ‘‘পর্যটন মন্ত্রী কী হিসেবে বলছেন আমার জানা নেই। আমরা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছি। যথা সময়েই আমাদের কথা জানাব।’’
বিজেপি’র জেলা সভাপতি প্রবীণ অগ্রবাল জানান, এই বোর্ডের কাজ কর্ম নিয়ে তারা সন্তুষ্ট নন। কেউ অনাস্থা আনলে তাঁদের অবস্থান পরিস্থিতিই বলবে।