—ফাইল চিত্র।
সিকিমের বিপর্যয়ের আঁচ বাংলার পাহাড়েও পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কালিম্পঙের তিস্তাপার। সেই এলাকা পরিদর্শনে যাবেন রাজ্যের চার মন্ত্রী। বৃহস্পতিবার এই সিদ্ধান্ত হয়েছে রাজ্য মন্ত্রিসভায়। যে চার মন্ত্রী কালিম্পঙের বন্যা-বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শনে যাবেন, তাঁরা হলেন— শ্রীকান্ত মাহাতো, সত্যজিৎ বর্মণ, গোলাম রব্বানি, সাবিনা ইয়াসমিন।
বৃহস্পতিবার নিজের কালীঘাটের বাড়িতে মন্ত্রিসভার বৈঠক ডেকেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই বৈঠক শেষে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ জানান, ১৭ তারিখ চার মন্ত্রী ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে কালিম্পং যাবেন। সেখানে কী কী করতে হবে, পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে তাঁরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন। উদয়ন নিজেও সেখানে যাবেন বলে জানিয়েছেন।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা নির্দেশে ইতিমধ্যেই কালিম্পঙের বিপর্যস্ত এলাকা ঘুরে দেখে এসেছেন অরূপ। হড়পা বানে কালিম্পঙের তিস্তাবাজার সংলগ্ন এলাকায় সব চেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দাদের ত্রাণ শিবিরে রাখা হয়েছিল। তাঁদের অবস্থা সরেজমিনে দেখে এসেছেন মন্ত্রী। সেই সময় অরূপের সঙ্গেই ছিলেন উদয়ন, দলের প্রাক্তন সাংসদ শান্তা ছেত্রী, শিলিগুড়ি পুরনিগমের মেয়র গৌতম দেব এবং ডেপুটি মেয়র রঞ্জন সরকার। অরূপ জানিয়েছিলেন, উত্তরে বন্যা বিপর্যয়ে নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। উত্তরবঙ্গের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জিটিএ-কে রাজ্যের কোষাগার থেকে ২৪ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। ওই সময় অরূপের সঙ্গে ছিলেন জিটিএ-র চিফ এগজ়িকিউটিভ অনীত থাপাও। মন্ত্রী আরও জানিয়েছিলেন, জিটিএ-র সঙ্গে সমন্বয় রেখেই সব কাজ করা হচ্ছে।
কালিম্পঙে গিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধেও আক্রমণ শানিয়েছিলেন অরূপ। তিনি বলেছিলেন, ‘‘সিকিমকে কেন্দ্র সাহায্য করছে। আমাদের তাতে কোনও আপত্তি নেই। ভয়ঙ্কর অবস্থা সিকিমের। আমরা চাই, আরও বেশি করে ওদের সাহায্য করা হোক। কিন্তু কালিম্পংও ভারতের মধ্যে পড়ে। কেন কালিম্পংকে বঞ্চিত করা হচ্ছে? এক টাকাও কালিম্পঙের জন্য বরাদ্দ করা হল না। সব সময়েই বাংলার প্রতি বিমাতৃসুলভ আচরণ করা হয়। ১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনার টাকা সব রাজ্য পাবে। শুধু বাংলা পাবে না। দুর্যোগ হলে ক্ষতিপূরণ পায় সব রাজ্য। বাংলা পায় না।’’
অরূপের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে দার্জিলিঙের বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা বলেছিলেন, ‘‘ঘটনার চার দিন পর ছবি তোলার জন্য উনি মাঠে নেমেছেন। অন্য দিকে, ঘটনার দিন থেকেই সিকিমের মুখ্যমন্ত্রীকে দেখুন। রাত দিন এক করে কাজ করছেন। অরূপ বিশ্বাসের কাছে আমি জানতে চাই, ২০২১ সালে যখন ভূমিধস হয়েছিল, ৪৭৫ কোটি টাকা কেন্দ্রের থেকে আমি এনেছিলাম। অরূপদা বলুন, দার্জিলিং, কালিম্পঙের লোকেরা কত টাকা পেয়েছেন? আমাদের প্রশ্ন করার আগে নিজেদের প্রশ্ন করুন। দার্জিলিং ও কালিম্পঙের মানুষের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের যা করা দরকার, সেটা করবে। কেন্দ্রের ফান্ডের জন্য রিপোর্ট পাঠাতে হয়। যেটা সিকিম প্রথম দিন থেকেই করছে। আমি চিঠি লিখেছি কেন্দ্রের কাছে। অবশ্যই টাকা বরাদ্দ হবে।’’