বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।—ফাইল চিত্র।
মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বী, তবে কূটনীতিতে মিত্র বাংলাদেশ। সেই মিত্র দেশের প্রধানমন্ত্রীর জন্য আজ, শুক্রবার ইডেন গার্ডেন্সে বিশেষ নিরাপত্তা বলয় তৈরি রাখছে কলকাতা পুলিশ। লালবাজারের খবর, হাসিনা এমন এক জন বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধান, যাঁর বিরুদ্ধে জঙ্গি সংগঠনের হুমকিও রয়েছে।
সেটা মাথায় রেখেই এই বিশেষ নিরাপত্তা ব্যূহ। ইডেনে হাসিনার জন্য পৃথক একটি ঘেরাটোপ বা বক্স তৈরি হচ্ছে। সেটি ঘিরে রাখবেন কমান্ডোরা। ওই বক্সে হাসিনা এবং তাঁর ঘনিষ্ঠেরা থাকবেন। বাংলাদেশের নিরাপত্তা দল ইতিমধ্যেই ইডেনের ওই বিশেষ সুরক্ষা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখেছে।
পুলিশের খবর, হাসিনার নিজস্ব একটি নিরাপত্তা দল তাঁর সঙ্গেই আসবে। তবে মহানগরে অবস্থানকালে তাঁয় নিরাপত্তার মূল দায়িত্ব থাকবে কলকাতা পুলিশের হাতেই। সাম্প্রতিক কালে আর কোনও বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধানের সফরে এমন নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করা হয়নি। পুলিশের একাংশের বক্তব্য, এ রাজ্যে যে-হেতু জেএমবি জঙ্গি সংগঠনের ডেরার সন্ধান একাধিক বার মিলেছে, তাই বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধানের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সামান্যতম ফাঁকও রাখতে দেওয়া উচিত হবে না।
আজ, শুক্রবার ইডেনে প্রথম দিন-রাতের টেস্ট খেলতে নামছে ভারত ও বাংলাদেশ। বিসিসিআই-এর সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের আমন্ত্রণে সেই ম্যাচের উদ্বোধনে আসছেন হাসিনা। লালবাজারের খবর, বৃহস্পতিবার হাসিনার নিরাপত্তা নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেন পুলিশ কমিশনার (সিপি) অনুজ শর্মা-সহ শীর্ষ কর্তারা। ইডেনে হাসিনার পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও থাকতে পারেন। তবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আসছেন কি না, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত কোনও খবর নেই।
আজ সকালেই কলকাতা বিমানবন্দরে নামবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর বিমান। সেখান থেকে নিউ টাউন, ইএম বাইপাস, পরমা উড়ালপুল, এজেসি বোস উড়ালপুল হয়ে আলিপুরের একটি পাঁচতারা হোটেলে পৌঁছবেন হাসিনা। তার পরে হোটেল থেকে ইডেনে পৌঁছে ম্যাচের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। ইডেনে বেশ কিছু ক্ষণ কাটিয়ে তিনি ফিরবেন হোটেলে। কয়েকটি বৈঠক সেরে সন্ধ্যায় আবার যোগ দেবেন ইডেনের নৈশভোজে। রাতেই কলকাতা বিমানবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশে পাড়ি দেবে তাঁর বিমান।
পুলিশি সূত্রে জানা গিয়েছে, সিপি-র নির্দেশ অনুযায়ী পুলিশ বিমানবন্দর থেকে আলিপুরের পাঁচতারা হোটেল এবং সেখান থেকে ইডেনের যাত্রাপথ নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হচ্ছে। হাসিনার যাতায়াতের পথে থাকা উড়ালপুলের তলাতেও কড়া নজরদারি ও নিরাপত্তা থাকবে। হোটেলে থাকবেন সাদা পোশাকের পুলিশকর্মী ও কমান্ডোরা।