রাজ্যের নারী ও শিশুকল্যাণমন্ত্রী শশী পাঁজা। —ফাইল চিত্র।
হোটেলে নাবালিকাদের নিয়ে গিয়ে দেহব্যবসা চালানোর অভিযোগে হাওড়ায় ‘বিজেপি নেতা’ সব্যসাচী ঘোষ গ্রেফতার হতেই আসরে নেমেছিল তৃণমূল। এ বার আক্রমণের ঝাঁঝ বৃদ্ধি করলেন রাজ্যের নারী ও শিশুকল্যাণমন্ত্রী শশী পাঁজা। ধৃত সব্যসাচী দলের কেউ নন বলে বিজেপি নতুন করে দাবি করলেও, নিজের এক্স (পূর্বতন টুইটার) হ্যান্ডলে ছবি দিয়ে শশী দাবি করলেন, সব্যসাচী বিজেপিরই লোক।
শশী যে ছবিগুলি এক্সে পোস্ট করেছেন তার একটিতে দেখা যাচ্ছে, ২০১৬ সালে বিজেপির একটি সভায় বক্তৃতা করছেন সব্যসাচী। ওই সভার বক্তা ছিলেন বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষও। অপর ছবিটিতে দেখা যাচ্ছে, দিলীপের সঙ্গে হাসিমুখে ছবি তুলছেন সব্যসাচী। এই ছবিগুলি দিয়ে শশী লিখেছেন, “বিজেপি নেতা নাবালিকাদের দিয়ে দেহব্যবসা চালাচ্ছেন। এর পরেও নিজেদের বাঁচাতে জঘন্য মিথ্যা বলছে বিজেপি। যেখানে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে ধৃতের কাঁধে হাত রেখে ছবি তুলছেন স্বয়ং দিলীপ ঘোষ।”
বুধবার সন্ধ্যায় সাঁকরাইলের ধূলাগড়ে ১১৬ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে একটি হোটেল থেকে ১১ জনকে গ্রেফতার করে সাঁকরাইল থানার পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে ছিলেন হোটেলের মালিক এবং আন্দুলের বাসিন্দা সব্যসাচী। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি এবং তাঁর দলবল দীর্ঘ দিন ধরে ওই হোটেলে নাবালিকা মেয়েদের এনে দেহব্যবসা চালাচ্ছিলেন। ঘটনাস্থল থেকে দু’জন নাবালিকা ও চার জন প্রাপ্তবয়স্ক মহিলাকেও উদ্ধার করে পুলিশ। এর পরেই সব্যসাচীর গ্রেফতারি নিয়ে শাসকদল সুর চড়াতে শুরু করে। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছিল, তিনি বিজেপির নেতা। দলের হাওড়া সদর সাংগঠনিক জেলার কিসান মোর্চার সম্পাদক। বিজেপির তরফে শুক্রবার জানিয়ে দেওয়া হল, কোনও পদে থাকা তো দূরের কথা, ধৃতের সঙ্গে দলের কোনও যোগই নেই। যদিও চলতি মাসে হাওড়া সদরে বিজেপি পদাধিকারীদের যে তালিকা প্রকাশিত হয়েছিল, তাতে নাম ছিল সব্যসাচীর। সব্যসাচীকে এর আগে বিজেপি নেতা বলেই জানিয়েছিলেন দলের হাওড়া সদরের সম্পাদক ওমপ্রকাশ সিংহ। তিনি বলেন, ‘‘সন্দেশখালির ঘটনা থেকে দৃষ্টি ফেরানোর জন্য এই ধরনের ঘটনা হচ্ছে। সব্যসাচী সরাসরি এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত কি না, তা নিরপেক্ষ ভাবে তদন্ত করে দেখুক পুলিশ। তিনি যদি দোষী প্রমাণিত হন, তবে দল তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে এবং দলও এ ব্যাপারে আলাদা করে তদন্ত করবে। তবে বিরোধী দলের কর্মীদের পুলিশ হামেশাই মিথ্যে মামলায় জড়াচ্ছে। এটা ঠিক নয়।’’ কিন্তু শুক্রবার হাওড়া সদর সাংগঠনিক জেলার বিজেপি সভাপতি রমাপ্রসাদ ভট্টাচার্য দাবি করেন, দলের সঙ্গে সব্যসাচীর কোনও সম্পর্ক নেই। গত ৯ ফেব্রুয়ারি বিজেপি নেতৃত্ব যে পদাধিকারীদের তালিকা প্রকাশ করেছিল, তাতে শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে সমন্বয় রক্ষাকারী সেলের দায়িত্বে রাখা হয়েছিল সব্যসাচীকে। ঘটনাচক্রে, সেই তালিকাতেও সই ছিল রমাপ্রসাদের।