বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের নানা টালবাহানার পর অবশেষে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে বসন্ত উৎসব। কিন্তু মাত্র ২৪ ঘণ্টার নোটিসে উৎসব আয়োজনের বিষয়টি নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।
গত বছর করোনার আবহে শেষ মুহূর্তে বাতিল হয়েছিল বসন্ত উৎসব। দীর্ঘদিন প্রস্তুতি নেওয়ার পর উৎসব বাতিল হওয়ায় স্বভাবতই হতাশ ছিলেন পড়ুয়া এবং আশ্রমিকেরা। তাঁদের আশা ছিল এ বছরে আনন্দে মাতবেন। সঙ্গীত ভবনের পড়ুয়া এবং অধ্যাপক-অধ্যাপিকারা অনেক আগে থেকে বসন্ত উৎসবের প্রস্তুতি নিলেও তাঁরাও সম্পুর্ণ অন্ধকারে ছিলেন বসন্ত উৎসব কবে হচ্ছে তা নিয়ে। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ তাঁদের কড়া নির্দেশ দিয়েছিলেন, এ বিষয়ে কারও কাছে কোনওভাবেই মুখ খোলা যাবে না।
সোমবার বিকালে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের একটি বৈঠকের পর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় মঙ্গলবার উদযাপিত হবে বসন্ত উৎসব। তড়িঘড়ি নেওয়া এই সিদ্ধান্তে স্বভাবতই বিড়ম্বনায় পড়েছেন অংশগ্রহণকারী ছাত্রছাত্রীরা। কারণ প্রস্তুতির জন্য তাদের কাছে পর্যাপ্ত সময় নেই, পাশাপাশি এবছর এ ভাবে বসন্ত উৎসব হওয়ায় তাঁদের অভিভাবকরাও বঞ্চিত হলেন বসন্ত উৎসব দেখা থেকে। এমনকি, অনুষ্ঠানে ব্রাত্য থাকলেন প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রী থেকে শুরু করে প্রবীণ আশ্রমিক ও স্থানীয় বাসিন্দারা। স্বভাবতই তাঁদের একাংশও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এই ঘটনায়।
বিগত কয়েক বছরে বসন্ত উৎসব ঘিরে পর্যটকদের যে উন্মাদনা দেখা গেছিল তা এড়ানোর জন্যই বসন্ত উৎসব নির্দিষ্ট দিনে করা হবে না বলে ঠিকই ছিল কর্তৃপক্ষের তরফে। কিন্তু অংশগ্রহণকারী পড়ুয়াদের কে বিষয়টি না জানানোই তারাও সম্পুর্ণ ধোঁয়াশার মধ্যে ছিলেন। তড়িঘড়ি এই সিদ্ধান্তের ফলে আগামীকাল তাঁরা কী ভাবে প্রস্তুতি নেবেন তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।
এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের তরফে কেউ মুখ না খুললেও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অধ্যাপক জানান, চলতি করোনা আবহে ঘরোয়া ভাবে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে বসন্ত উৎসব। দিনে চিরাচরিত বসন্ত উৎসবে পাশাপাশি রাতে অনুষ্ঠিত হবে চিত্রাঙ্গদা নৃত্যনাট্য। সমগ্র অনুষ্ঠানটি হবে শান্তিনিকেতনের গৌড়প্রাঙ্গণে। যদিও এ বিষয়ে বিশ্বভারতীর জনসংযোগ আধিকারিক অনির্বাণ সরকার মুখ খোলেননি।