—ফাইল চিত্র।
বাড়ি থেকে পালিয়ে যৌন হেনস্থার শিকার হতে হল বেলগাছিয়ার এক কিশোরীকে। তবে দুর্ভোগের সেখানেই শেষ নয়। অভিযোগ জানাতে গিয়ে জিআরপি এবং থানাতেও তাঁকে হয়রানির মুখে পড়তে হয় বলে দাবি কিশোরী ও তার পরিবারের। বিষয়টি সংবাদমাধ্যমের কাছ থেকে জেনে নড়েচড়ে বসেছে হাওড়া পুলিশ। বুধবার শীর্ষকর্তাদের নির্দেশে তদন্ত শুরু করেছে লিলুয়া থানা। যৌন হেনস্থায় অভিযুক্ত পলাতক বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে ঘটনার অভিযোগ জানাতে গিয়ে কেন ওই পরিবারকে হয়রানির শিকার হতে হয়েছে, সে প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারেননি হাওড়া পুলিশের শীর্ষকর্তারা।
পুলিশ সূত্রে খবর, বেলগাছিয়া এলাকার দিন কয়েক আগে একটি ভাড়াবা়ড়িতে এসে উঠেছিল ওই কিশোরীর পরিবার। তবে পরিবারে ঝামেলা হওয়ায় দু’দিন আগে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায় ওই কিশোরী। এরপর জগন্নাথ ঘাটে গিয়ে বসেছিল সে। সেখানে এক তরুণীর সঙ্গে আলাপ হয় তার। এরপর সেই তরুণীর সঙ্গে বেলুড় এলাকায় তাঁর ঝুপড়িতে গিয়ে ওঠে ওই কিশোরী। অভিযোগ, মঙ্গলবার রাতে ওই তরুণীর স্বামী ভিকি রায় কিশোরীকে যৌন হেনস্থা করেন। এর পর বুধবার সকালে তাকে লিলুয়া স্টেশনে ছেড়ে দেওয়া হয়। সে সময় থেকেই অসুস্থ বোধ করতে থাকে ওই কিশোরী।
কিশোরীর পরিবারের সদস্যদের দাবি, এক অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন পেয়ে লিলুয়া স্টেশন থেকে মেয়েটিকে উদ্ধার করেন তাঁরা। ওই ঘটনার অভিযোগ জানাতে গিয়েও একপ্রস্থ হয়রানির শিকার হতে হয় তাঁদের। তাঁরা জানিয়েছেন, লিলুয়া থানা এলাকায় উদ্ধার হওয়ায় কিশোরীকে ওই থানায় পাঠিয়ে দেয় বেলুড় জিআরপি। অসুস্থ অবস্থাতেই লিলুয়া থানায় কিশোরীকে নিয়ে গিয়ে অভিযোগ জানাতে গেলে তাঁদেরকে সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত— আট ঘণ্টা থানার বাইরে বসিয়ে রাখা হয় বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন: আসানসোলের ভোটার তালিকায় নাম উঠল এলাকার সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়র
আরও পড়ুন: বেআইনি ভাবে তৈরি বিজেপির অফিস, অভিযোগ ইংরেজবাজার পুরসভার, পাল্টা তোপ বিজেপির
অভিযোগ দায়ের করা নিয়েও হয়রানির শিকার হতে হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে ওই কিশোরীর পরিবার। তাদের অভিযোগ, লিলুয়া স্টেশনের টিকিট কাউন্টারের কাছ থেকে ওই কিশোরী উদ্ধার হওয়ায় জিআরপিতে অভিযোগ করতে গেলে লিলুয়া থানায় অভিযোগ করাতে বলা হয়েছিল। কিশোরীর পরিবারের দাবি, অভিযোগ কোথায় নেওয়া হবে, তা নিয়ে চলতে থাকে টানাপড়েন। সে সময় মাঝে মধ্যেই আচ্ছন্ন হয়ে পড়ছিল ওই কিশোরী। তার দাদার অভিযোগ, মেয়েটির শারীরিক পরীক্ষা না করিয়ে উল্টে তাঁদেরকেই তা করাতে বলে পুলিশ।
কিশোরী এবং তার পরিবারের হয়রানির কথা সংবাদমাধ্যমের থেকে খবর পেয়ে উদ্যোগী হয় হাওড়া সিটি পুলিশ। গোটা ঘটনায় তদন্ত শুরু করার জন্য লিলুয়া থানাকে নির্দেশ দেন হাওড়া সিটি পুলিশের ডিসি (নর্থ) প্রবীণ প্রকাশ।
ঘটনার তদন্তে নেমে ওই তরুণীর স্বামী তথা অভিযুক্ত ভিকি রায়ের খোঁজ শুরু করেছে পুলিশ। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ঘটনার পর থেকে এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে ভিকি। তবে এই ঘটনার অভিযোগ নিতে কেন এত বিলম্ব হল, সে প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেনি পুলিশ। গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা।