মিতার শরীরে বহু আঘাত, বলছে রিপোর্ট, দাবি পুলিশের

শুধু নাকে বা কপালেই আঘাত নয়। উলুবেড়িয়ার কুশবেড়িয়ার বছর চব্বিশের বধূ মিতা মণ্ডলের মৃত্যুর তদন্তে নেমে পুলিশ জেনেছে, তাঁর দেহের নানা জায়গাতে গভীর আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। বৃহস্পতিবার ওই বধূর দেহের ময়না-তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট জানতে পেরেছে পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

উলুবেড়িয়া ও কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০১৬ ০৩:০৩
Share:

মিতা মণ্ডল

শুধু নাকে বা কপালেই আঘাত নয়। উলুবেড়িয়ার কুশবেড়িয়ার বছর চব্বিশের বধূ মিতা মণ্ডলের মৃত্যুর তদন্তে নেমে পুলিশ জেনেছে, তাঁর দেহের নানা জায়গাতে গভীর আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। বৃহস্পতিবার ওই বধূর দেহের ময়না-তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট জানতে পেরেছে পুলিশ। সেখানেই মিতার শরীরের নানা জায়গায় আঘাতের উল্লেখ রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

Advertisement

তদন্তকারীরা জানান, ওই বধূর স্বামী, ধৃত রানার বয়ান অনুযায়ী, গলায় দড়ির ফাঁস লাগানো অবস্থায় মিতার দেহ ঝুলছিল। নামাতে গিয়েই খাটে ধাক্কা লাগায় স্ত্রীর মুখে-কপালে আঘাত লাগে। কিন্তু ময়না-তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, মৃতদেহ নামাতে গিয়ে ওই রকম গভীর আঘাত প্রায় অসম্ভব। ওই রিপোর্ট ও সুরতহালের রিপোর্টও দেখা হচ্ছে। হাওড়ার (গ্রামীণ) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অর্ণব বিশ্বাস জানান, প্রয়োজনে ময়না-তদন্তকারী চিকিৎসকের সঙ্গে আঘাতের বিষয়ে আলোচনা করা হবে। সঠিক তদন্তের দাবিতে এ দিন মিতার বাপেরবাড়ির লোকজন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দফতরে একটি আবেদনপত্র জমা দেন। মিতার বাপের বাড়িতে যান যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তাঁর প্রাক্তন সহপাঠীরা।

মঙ্গলবার, দশমীর ভোরে ফুলেশ্বরের একটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে মিতার দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, মিতাকে মৃত অবস্থাতেই আনা হয়। তাঁর নাকে আঘাতের চিহ্ন ছিল। সেখান থেকে রক্ত পড়ছিল। কপালের একটি অংশও বেশ ফোলা ছিল। সেই কারণে তাঁরা পুলিশ ডাকেন। মিতার বাপের বাড়ির লোকজন রানা ও তার পরিবারের লোকজনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ রানা ও তার বাবা বিজেন্দ্রবাবুকে গ্রেফতার করে। অভিযুক্তদের পরিবারের দাবি, আত্মঘাতী হন মিতা। পুজো দেখাতে নিয়ে যাওয়া নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে গোলমাল হয়েছিল।

Advertisement

কিন্তু রহস্যের জট এত সহজে খোলার নয় বলেই মত তদন্তকারীদের। মিতার মোবাইল ঘেঁটে তাঁরা দেখেছেন, নবমীতে রাত ২টো ৫৫ মিনিট থেকে ৩টে ৪ মিনিট পর্যন্ত প্রতি মিনিটে একবার করে রানার ফোনে ১০ বার ‘মিস্ড কল’ হয়েছিল। সেই ফোন ধরা হয়নি। কেন, তা ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। কুশবেড়িয়া থেকে ফুলেশ্বরের ওই হাসপাতাল গাড়িতে বড়জোর মিনিট পাঁচেক। কিন্তু মিতাকে উদ্ধারের পরে ওই হাসপাতালে নিয়ে যেতে তাঁর স্বামীর প্রায় দেড় ঘণ্টা লেগে গেল কেন, এ প্রশ্নও তুলছেন তদন্তকারীরা। তদন্তকারীরা জেনেছেন, নবমীতে রাত ৮টা নাগাদ রানা স্ত্রীকে নিয়ে ঠাকুর দেখতে যান। রাত ১১টা পর্যন্ত তাঁরা পাড়াতেই ছিলেন। সেখান থেকেই ফিরে আসেন। তার পরে রানা ফের বেরোন। তদন্তকারীদের কাছে রানা স্ত্রীর ‘সুইসাইড নোট’ মেলার কথা জানান। কিন্তু সেই জাতীয় কাগজ রানা পুলিশকে দেখাতে পারেননি। মিতার দাদা খোকন বলেন, ‘‘মদ খাওয়া নিয়ে বোনের সঙ্গে রানার গোলমাল হতো। আমরা মিটিয়েও দিতাম। তবে খুনের পিছনে অন্য চক্রান্তও থাকতে পারে। পুলিশ তদন্ত করে দেখুক।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement