ছবি: পিটিআই।
খেলার মাঠে ডিউটি। তবে মাঠে নয়, পুলিশকর্মীদের চোখ রাখতে হবে গ্যালারিতে। ইডেন গার্ডেন্সে ভারত-বাংলাদেশ দিনরাতের টেস্ট ম্যাচে পুলিশকর্মীদের ডিউটি নিয়ে এমনই নির্দেশ দিয়েছে লালবাজার।
পুলিশের খবর, ওই ম্যাচে প্রচুর দর্শক আসবেন। সর্বোপরি থাকবেন ভিআইপি অতিথিরা। নিরাপত্তার স্বার্থেই এই ব্যবস্থা। দর্শকদের সঙ্গে নম্র ব্যবহারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পুলিশকে। বলা হয়েছে, উত্তেজক পরিস্থিতি তৈরি হলেও লাঠি চালানো যাবে না। মাঠের ভিতরে কর্তব্যরত পুলিশকর্মীরা মোবাইল ব্যবহার করতে পারবেন না। এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘কোনও কোনও পুলিশকর্মী চট করে মেজাজ হারিয়ে ফেলেন। বিশেষ করে তাঁদের উদ্দেশেই এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে নম্র ভাবে কথা বললেও শৃঙ্খলারক্ষায় ফাঁক থাকবে না।’’
জাতীয় দলের খেলা হলে অনেকে পতাকা নিয়ে আসেন বা গায়ে-গালে জাতীয় পতাকার রং ব্যবহার করেন। মাঠে যাতে পতাকার অবমাননা না-হয়, তা দেখতে বলা হয়েছে। জাতীয় পতাকার অবমাননা হলে নির্দিষ্ট আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শুক্রবার ওই টেস্ট শুরু হবে ইডেনে। মঙ্গলবারেই বাংলাদেশ ও ভারতীয় দল কলকাতায় এসে গিয়েছে। আলিপুর ও মধ্য কলকাতার দু’টি পাঁচতারা হোটেলে থাকবে তারা। মাঠে যাবে কমান্ডো পাহারায়। তাদের যাতায়াতের পথ-সহ ইডেনকে ঘিরে ১২ জায়গায় বালির বাঙ্কার তৈরি করা হচ্ছে। ম্যাচ শুরুর আগে থেকেই সেখানে নজরদারি চালাবেন বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জওয়ানেরা। উদ্বোধনে আসতে পারেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তাই আলাদা ভিআইপি নিরাপত্তার ব্যবস্থা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ঢিলেমি কেন, ধমক মুখ্যমন্ত্রীর, পরোক্ষে নিশানা বিজেপিকেই
লালবাজারের খবর, ইডেনের চার দিকে নজরদারির জন্য ন’টি ওয়াচ টাওয়ার বা নজরমিনার থাকছে। প্রতিটিতে থাকবে কমব্যাট ফোর্স। উন্নত আগ্নেয়াস্ত্র ছাড়াও নাইট ভিশন দূরবিন থাকবে তাদের হাতে। নিরাপত্তার খাতিরে ইডেনের গ্যালারিকে ছ’টি সেক্টরে ভাগ করা হয়েছে। প্রতিটি সেক্টরের দায়িত্বে থাকছেন ডিসি পদের অফিসার। মাঠের ভিতরের নিরাপত্তার দায়িত্ব দেখভাল করবেন দু’জন ডিসি। স্টেডিয়ামের বাইরের অংশকেও ছ’টি সেক্টরের ভাগ করা হচ্ছে। সেখানকার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকছেন দু’জন আইপিএস অফিসার। ইডেনের প্রবেশদ্বারের বাইরে বুলেটপ্রুফ গাড়ি নিয়ে মোতায়েন থাকবেন কমান্ডোরা।
নিরাপত্তার কয়েকটি ব্যূহ পেরিয়ে দর্শকদের ঢুকতে হবে গ্যালারিতে। জলের বোতল কিংবা মাঠে ছোড়া যায়, এমন কিছু সঙ্গে নেওয়া যাবে না। খানাতল্লাশির পরেই দর্শকদের মাঠে ঢুকতে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে লালবাজার। স্টেডিয়ামে তৈরি হচ্ছে চারটি অস্থায়ী সাব-কন্ট্রোল রুম, যেখান থেকে পুরো মাঠের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হবে। পাঁচটি পুলিশি সহায়তা শিবিরও তৈরি করা হচ্ছে।
এক পুলিশকর্তা জানান, মঙ্গলবার থেকেই পিচ পাহারার দায়িত্ব ন্যস্ত হয়েছে পুলিশকর্মীদের উপরে। চার শিফটে ওই দায়িত্ব পালন করবেন তাঁরা। ম্যাচ চলাকালীন নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে কয়েক হাজার পুলিশ।