হুঁশিয়ার। আজ ২১ জুলাইয়ের সভা উপলক্ষে শহরে বেনজির নিরাপত্তা।
প্রায় তিন হাজার পুলিশ আজ, বৃহস্পতিবার তৃণমূলের ২১ জুলাইয়ের সমাবেশ উপলক্ষে রাস্তায় নামবেন। অন্যান্য বারের তুলনায় অনেক বেশি। গত বছরই ছিল দেড় হাজার।
ধরে নেওয়া হচ্ছে, অন্যান্য বারের চেয়ে এ বার সমাবেশে ভিড় বেশি হবে। দু’মাস আগেই ফল বেরিয়েছে বিধানসভা ভোটের, যাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দ্বিতীয় বার রাজ্যের ক্ষমতায় এসেছেন বিপুল শক্তিতে এবং একক ভাবে। যার ফলে কর্মী-সমর্থকদের উৎসাহ বেশি থাকবে, সেটাই স্বাভাবিক। বুধবার বিকেলেই বিভিন্ন জেলা থেকে তৃণমূলের প্রায় ৫০ হাজার কর্মী-সমর্থক শহরে পৌঁছে গিয়েছেন বলে দলের শীর্ষ পর্যায়ের একটি সূত্রের খবর।
কিন্তু সম্ভাব্য ভিড় যে অভূতপূর্ব পুলিশি বন্দোবস্তের একমাত্র কারণ নয়, সেটা স্বীকার করছে লালবাজার।
এই মাসেই ঢাকার গুলশন ও কিশোরগঞ্জে পর পর জঙ্গি হামলা হয়েছে। এরই মধ্যে বর্ধমান স্টেশনে ধরা পড়েছে সন্দেহভাজন ইসলামিক স্টেট জঙ্গি মুসা। মুসার কাছ থেকে পাওয়া ও কিছু গোয়েন্দা-তথ্য থেকে জানা যাচ্ছে, কলকাতা তথা পশ্চিমবঙ্গে নাশকতা ঘটানোটা জঙ্গিদের পরিকল্পনার অঙ্গ। তার পর এ-ই প্রথম কলকাতায় এমন একটি সমাবেশ হতে যাচ্ছে, যেখানে লক্ষাধিক মানুষের জড়ো হওয়ার সম্ভাবনা। কাজেই, কোনও রকম ঝুঁকি নিতে চাইছে না পুলিশ।
পুলিশ সূত্রের খবর, সভাস্থল অর্থাৎ ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে বাঁধা মঞ্চের আশপাশে থাকা প্রায় সব বহুতলের দখল বুধবার রাত থেকে চলে এসেছে সশস্ত্র নিরাপত্তারক্ষীদের হাতে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ওই সব বহুতলের প্রতিটির ছাদে থাকবেন দু’জন পুলিশকর্মী। এ বার সভাস্থলের কাছে কোনও নজর মিনার করা হয়নি। তাই বাইনোকুলার দিয়ে বহুতলের ছাদ থেকে নজরদারি চালাবেন ওই পুলিশকর্মীরা। সেই সঙ্গে বেন্টিঙ্ক স্ট্রিটের কয়েকটি বহুতলে থাকবে কমান্ডোদের একটি দল। এ ছাড়াও শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে থাকা কমব্যাট ব্যাটেলিয়নের ছোট সাঁজোয়া গাড়িগুলো সভাস্থলের কাছাকাছি আনা হবে। যাতে কোনও রকম অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা যায়। লালবাজারের দাবি, এ বারই প্রথম ২১ জুলাইয়ের নিরাপত্তায় ওই বাহিনী মোতায়েন করা হচ্ছে।
সভাস্থলকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করে উচ্চপদস্থ পুলিশকর্তাদের হাতে তার নজরদারির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কেবল সভাস্থলের নিরাপত্তা দেখভালের জন্য এক জন বিশেষ কমিশনার ও দু’জন অতিরিক্ত কমিশনার থাকছেন। তা ছাড়া, ডেপুটি কমিশনার থাকবেন ২৩ জন। তাঁদের প্রত্যেকের অধীনেই থাকবে বিশাল বাহিনী।
লালবাজার সূত্রের খবর, এই আইপিএস অফিসাররা ছাড়াও ৬০ জন সহকারী কমিশনার, ১৬০ জন ইনস্পেক্টর, এবং সার্জেন্ট ও সাব ইনস্পেক্টর মিলিয়ে থাকবেন মোট ৪০০ জন। মোতায়েন রাখা হচ্ছে ২০০ মহিলা পুলিশকর্মীকেও।