ভাম বিড়াল।—প্রতীকী ছবি
চকচকে ফল্স সিলিং। সেখান থেকে কখনও আস্তে কখনও বা জোরে আওয়াজ আসছে কানে। আবার কিছু ক্ষণের মধ্যেই আওয়াজ উধাও। ফল্স সিলিংয়ে কী আর থাকতে পারে! তাই বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।
কিন্তু দিন যত গড়িয়েছে, ততই বেড়েছে সেই আওয়াজ। তাই আর সেটাকে উপেক্ষা করা যায় না। এ বার একেবারে খানাতল্লাশির সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। তা, সেই তল্লাশি চালাতে গিয়েই চক্ষু চড়কগাছ! দেখা গেল, সেখানে দিব্যি সংসার পেতে বসেছে ভাম। তার দাপটে গত কয়েক দিন অতিষ্ঠ হতে হয়েছে কারামন্ত্রীর সচিবালয়কে। অবশেষে ‘গ্রেফতার’ হয়েছে ভাম। হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছেন সচিবালয়ের কর্মী ও অফিসারেরা।
সচিবালয়ের কর্মীদের বসার জায়গার উপরে রয়েছে ফল্স সিলিং। মাঝখানে কিছুটা ফাঁকা জায়গা। তার উপরে আবার ফল্স সিলিং। তার পরে ছাদ। কিন্তু কর্মীদের মাথার উপরে ফল্স সিলিংয়ের পিছনের দিকের একটি অংশে প্লাইউড খুলে গিয়েছিল। কর্মী-আধিকারিকদের মতে, সেই অংশকে কাজে লাগিয়েই কারামন্ত্রীর সচিবালয়ে ভামের অনুপ্রবেশ।
তবে একটি ভামে তো খুব বেশি আওয়াজ আসার কথা নয়! আওয়াজ অনুসরণ করে জায়গাটা চিহ্নিত করে দেখা গেল, রীতিমতো ভাম-সংসার। সেই সংসারে রয়েছেন স্বয়ং তিনি। সঙ্গে রয়েছে তার তিন সন্তানসন্ততি। তাদের নিয়ে সংসার পেতেছে ভামপুঙ্গব। শুধু সংসার পেতেই নিরস্ত হয়নি সে। ফল্স সিলিংয়ের একটি ফাঁকা জায়গা দিয়ে বিভিন্ন বর্জ্যসামগ্রী ফেলতে শুরু করেছিল সে। সঙ্গে সিলিংয়ের উপরে উদ্দাম নৃত্য! তাতে কাজকর্ম লাটে উঠতে বসে কারামন্ত্রীর সচিবালয়ের।
দিন সাতেক পরে সেই ভাম-নৃত্য বন্ধ হল। জায়গা চিহ্নিত করার পরেই বাসস্থান বদল হল তাদের। তিন সন্তান-সহ বৃহস্পতিবার বিকেলে ধরা পড়ে ভাম। খাঁচায় পুরে তাদের নিয়ে গেল বন দফতর। ভাম অনুপ্রবেশের রাস্তা বন্ধ করে দিল পূর্ত দফতর। তবে অন্যেরা চলে গেলেও রাতে সচিবালয়ে আবার দেখা মিলেছিল অন্য একটি ভামের। সে ওই পরিবারের সদস্য বলেই কারাকর্মী ও আধিকারিকদের অভিমত। তবে অনুপ্রবেশের জায়গাটা বন্ধ হওয়ায় আপাতত তাঁরা নিশ্চিন্ত।