জামিন পাওয়ার পর সাত্তোরের নির্যাতিতাকে রূপার আলিঙ্গন। সিউড়ি আদালতে তাপল বন্দ্যোরাধ্যায়ের তোলা ছবি।
জামিন তো পেলেনই না। উল্টে, এ বার জেলের ভেতরে পুলিশি জেরার মুখে পড়তে চলেছেন সাত্তোরের নির্যাতিতা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকাশ্যে পাশে দাঁড়াতেই নির্যাতিতার উপরে আরও চাপ বাড়াল বীরভূম পুলিশ।
বিচারকের নির্দেশ সত্ত্বেও সাত্তোরে পুলিশের উপরে ‘হামলা’র মামলায় বুধবার কেস ডায়েরি জমা দিল না বীরভূম পুলিশ। তার পরেও নির্যাতিতা যাতে কোনও ভাবেই জামিন না পান, তার জন্য জোর সওয়াল করেন মামলার সরকারি আইনজীবী কুন্তল চট্টোপাধ্যায়। তিনি, পুলিশ ধৃতদের বিরুদ্ধে যে সব ধারা দিয়েছে এবং ঘটনায় দুই সাক্ষী যে গোপন জবানবন্দি দিয়েছেন, তার ভিত্তিতে ধৃতদের জেরা করা প্রয়োজন। এই পরিস্থিতিতে অভিযুক্তদের জামিন দেওয়া ঠিক হবে না। যদিও নির্যাতিতার আইনজীবী সোমনাথ মুখোপাধ্যায় বিচারককে পাল্টা অভিযোগ করেন পুলিশ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে এই মামলা সাজাচ্ছে। কেস ডায়েরিও দিচ্ছে না। ধৃত মহিলাদের অন্তত জামিন দেওয়া হোক। সোমনাথ বলেন, ‘‘ধৃত মহিলা চার বছরের শিশুর মা। এখন রমজান মাস চলছে। তাঁকে জামিন দেওয়া হোক।’’ সিউড়ির সিজেএম ইন্দ্রনীল চট্টোপাধ্যায় অবশ্য দু’পক্ষের সওয়াল-জবাব শুনে ধৃতদের জামিনের আবেদন খারিজ করে দেন। এ দিন পুলিশ জেলে গিয়ে নির্যাতিতাকে জেরা করার অনুমতি চায়। বিচারক সে আবেদনও মঞ্জুর করেছেন। এ দিকে, বীরভূম পুলিশের এই তৎপরতার মধ্যে ‘রাজনৈতিক’ সক্রিয়তা দেখতে পাচ্ছেন বিরোধীরা। বিরোধীদের অভিযোগ, শাসকদের নেতারা যখন প্রকাশ্যে থানায় ঢুকে পুলিশকে পিটিয়ে চলে যান। তখন এলাকায় ঘুরে বেড়ালেও তৃণমূল নেতাদের পুলিশ ‘খুঁজে’ পায় না। অথচ বিরোধী রাজনীতির কেউ হলেই সাত্তোরের নির্যাতিতার মতো মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে অতি সক্রিয় হয়ে পড়ে। নির্যাতিতার জামিনের আবেদন খারিজ হওয়ার প্রতিক্রিয়ায় হাইকোর্টের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যও বলেন, ‘‘এটা বোলপুরে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর উত্তেজক বক্তৃতার ফল। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই সব কিছু হচ্ছে। পুলিশ কেস ডায়েরি সাজানোর চেষ্টা করছে।’’