মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। — ফাইল চিত্র।
‘দিদিকে বলো’ হেল্পলাইন নম্বরেই চালু হল ‘সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী’ কর্মসূচি। বৃহস্পতিবার নবান্ন সভাঘরে নতুন কর্মসূচির ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের সাধারণ মানুষের সমস্যার কথা সরাসরি জানানো যাবে এই নম্বরে। হেল্পলাইন নম্বরটি হল ৯১৩৭০৯১৩৭০। এই নম্বরে ফোন করলে প্রথমে মুখ্যমন্ত্রীর কণ্ঠে একটি বার্তা শোনা যাবে। ওই বার্তার পর যিনি ফোন করবেন, তাঁকে নিজের সমস্যার কথা জানাতে হবে।
এই নম্বরটিই ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিতে প্রথম বার ব্যবহার করা হয়েছিল। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের পর ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরকে নিজেদের পরামর্শদাতা হিসাবে নিয়োগ করেন তৃণমূল নেতৃত্ব। ওই বছর জুলাই মাসের শেষে নজরুল মঞ্চে ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সময় এই হেল্পলাইন নম্বরটি চালু করেছিলেন তিনি। লাগাতার এই কর্মসূচি চালিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের সাধারণ মানুষের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করেছিল শাসকদল। তার সুফলও মিলেছিল হাতেনাতে। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল ভোটে জিতে তৃতীয় বারের জন্য ক্ষমতায় আসে তৃণমূল। মুখ্যমন্ত্রীর আসনে বসেন মমতা।
কিন্তু, এ বার ‘সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী’ কর্মসূচির ঘোষণা হয়েছে নবান্ন থেকে। এই কর্মসূচির মূলত দায়িত্বে রাখা হয়েছে, আধিকারিক পি বি সেলিমকে। যদিও, মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, এই কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত থাকবেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী, প্রাক্তন মুখ্য সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ রাজ্য প্রশাসনের বরিষ্ঠ আধিকারিকেরা। এই কর্মসূচি ঘোষণার পর মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘এই নম্বরে ফোন করে রাজ্য সাধারণ মানুষ নিজের অসুবিধা ও সমস্যার কথা জানাতে পারবেন। নবান্ন থেকেই সরাসরি সাধারণ মানুষের সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করা হবে।’’ প্রশাসনিক মহলের একাংশ মনে করছে, ২০১৯ সালে ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচির সুফল পাওয়ার পর, তার পুনরাবৃত্তি চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাই আসন্ন পঞ্চায়েত ও আগামী বছর লোকসভা ভোটের কথা মাথায় রেখেই আবার নতুন মোড়কে এই কর্মসূচি শুরু করছেন। মুখ্যমন্ত্রী সরাসরি রাজ্যের মানুষের সমস্যার সমাধান করছেন, এমন ঘটনা ঘটলে রাজ্যের শাসকদলের প্রতি মানুষের আস্থা বাড়বে বলেই মনে করছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। তাই এ বার আর অন্য কোনও সংস্থার হাতে না দিয়ে রাজ্য সরকার মারফত এই পরিষেবা চালু করলেন মুখ্যমন্ত্রী।
২০১৯ সালে যখন যখন ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচির সূচনা হয়েছিল, তখন তা পরিচালনার দায়িত্ব ছিল ভোটকুশলী প্রশান্তের সংস্থা আইপ্যাক। কিন্তু এ বার রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষকর্তাদের হাত দিয়ে এই কর্মসূচি রূপায়ণে পদক্ষেপ করেছেন মমতা। শুক্রবার থেকে গণমাধ্যমে প্রচার করে ‘সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী’র কর্মসূচি প্রচার করা হবে বলে জানিয়েছেন মমতা।