সাঁতরাগাছি সেতু। ফাইল চিত্র।
নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকে দেড় মাসের জন্য বন্ধ হচ্ছে সাঁতরাগাছি সেতু। ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রায় দেড় মাস চলবে সেতুর মেরামতি। সেতু বন্ধ হওয়ার আগে বৃহস্পতিবার সেখান দিয়ে যাতায়াতকারী গাড়ির সমীক্ষা করল পুলিশ। দিন কয়েক আগের সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, কোনা এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে দৈনিক ৭০ হাজার গাড়ি চলে! এই তথ্যে চিন্তিত খোদ হাওড়া সিটি পুলিশের কর্তারা। সেতু বন্ধ থাকাকালীন কলকাতা ও হাওড়ামুখী এত গাড়িকে বিভিন্ন রাস্তা দিয়ে ঘোরালেও কলকাতার যমজ শহরে যে যানজট এড়ানো সম্ভব, সেই নিশ্চয়তা দিচ্ছেন না হাওড়া সিটি পুলিশের কর্তারা। বরং ওই দেড় মাস তাঁদের রাতের ঘুম উড়ে যাবে, এ ব্যাপারে নিশ্চিত কর্তারা।
কোনা এক্সপ্রেসওয়ের উপরে সাঁতরাগাছি রেল সেতুর গার্ডার বদলানো ও মেরামতির সিদ্ধান্ত হয়েছে পুজোর আগেই। হাওড়া সিটি পুলিশ সূত্রের খবর, সেই কাজ শুরু হবে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে। সাঁতরাগাছি সেতু দিয়ে প্রতিদিন কত যানবাহন চলে, সেগুলিকে কোন রাস্তা দিয়ে ঘোরানো সম্ভব? এ সব জানতেই বৃহস্পতিবার সমীক্ষা চালায় হাওড়া সিটি পুলিশ। এ দিন পুলিশ কমিশনার প্রবীণকুমার ত্রিপাঠীর নেতৃত্বে সিটি পুলিশের পদস্থ আধিকারিকেরা সাঁতরাগাছি সেতু ও কোনা এক্সপ্রেসওয়ে পরিদর্শন করেন।
পরে সিপি জানান, গত ১২ থেকে ১৮ অক্টোবরের মধ্যে বিদ্যাসাগর সেতুর টোল প্লাজায় সমীক্ষা চালিয়ে দেখা গিয়েছে, দৈনিক গড়ে ৭০ হাজার বিভিন্ন ধরনের যানবাহন সাঁতরাগাছি সেতু দিয়ে যাতায়াত করে। এর মধ্যে দৈনিক ১২ থেকে ১৮ চাকার ট্রাক এবং ট্রেলার চলে ১২ থেকে ১৫ হাজার। এত সংখ্যক গাড়ি কোন দিক দিয়ে ঘোরালে যানজট এড়ানো যাবে, তা কার্যত পুলিশের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ।
প্রবীণকুমার বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘চার লেনের রাস্তা সাঁতরাগাছি সেতুতে গিয়ে দু’লেন হয়ে গিয়েছে। ফলে সেতুতে গাড়ির প্রচুর চাপ থাকে। তাই সেই যানবাহনকে সেতু মেরামতের সময় কোথা দিয়ে ঘোরানো হবে বা কী ভাবে ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণ করা হবে এ দিন সেটাই সরেজমিন খতিয়ে দেখা হয়েছে।’’ তিনি জানান, সাঁতরাগাছি সেতুর মেরামত চলাকালীন কোনা এক্সপ্রেসওয়েতে যাতে যানজট না হয়, তা দেখতে হবে। এ জন্য এক দিকে রাখা থাকবে ব্রেক ডাউন ভ্যান। রাস্তায় গাড়ি খারাপ হলে যাতে সরাতে সময় না লাগে। বেশি সংখ্যক সিসি ক্যামেরা এবং প্রচুর গার্ডরেল থাকবে। এক্সপ্রেসওয়েতে মোতায়েন থাকবেন ৮০০ ট্র্যাফিক পুলিশকর্মী।
প্রসঙ্গত, কোনা এক্সপ্রেসওয়ের উপরে গাড়ির চাপ বাড়ছে। এ দিকে সেতুর গার্ডারগুলির বহনক্ষমতা কমে যাচ্ছে। তাই ২০১৬ সালে এক বার সব গার্ডার মেরামত করা হয়। ছ’বছর পর সেগুলি ফের মেরামতির প্রয়োজন হয়েছে বলে রাজ্য পূর্ত দফতর ও কেএমডি-এর ইঞ্জিনিয়ারেরা পরিদর্শন করে তা রাজ্য সরকারকে জানিয়েছেন। এর পরেই সেতু বন্ধ করে মেরামতির সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।