সন্দেশখালি ২ বিডিওকে দফতরে ঢুকে মারধরের ঘটনায় আতঙ্কিত উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন মহল। শুক্রবার ব্লক ও মহকুমাস্তরের একাধিক আধিকারিক বারাসতে জেলাশাসকের সঙ্গে বৈঠক করেন।
তাঁদের অনেকে জানান, শাসক দল বা বিরোধীদের রোষের মাঝে পড়ে নিয়ম মেনে প্রশাসনিক কাজকর্ম করা সমস্যার হয়ে উঠছে। জেলাশাসক চৈতালি চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সন্দেশখালির ঘটনাটি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ ভবিষ্যতে এমন ঘটলে প্রশাসন কড়া পদক্ষেপ করবে বলেও আশ্বস্ত করেন তিনি। নবান্নের শীর্ষস্তর থেকেও এ দিন জেলাশাসককে নির্দেশ গিয়েছে, দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোরতম ব্যবস্থা নিতে হবে।
এ দিকে, সন্দেশখালি ২ বিডিও কৌশিক ভট্টাচার্যের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে বসিরহাট সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল থেকে পাঠানো হয়েছে এসএসকেএমে।
অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় দুর্নীতির অভিযোগ ধরে ফেলেছিলেন কৌশিক। ফলে স্থানীয় কিছু তৃণমূল নেতার চক্ষুশূল হয়ে ওঠেন। তাঁর উপরে হামলার আশঙ্কা ছিলই। কয়েক মাস আগে বিডিওর জন্য দেহরক্ষীর ব্যবস্থা করে প্রশাসন। তার পরেও হামলা ঠেকানো গেল না। বিডিও এবং তাঁর দফতরের কয়েকজন কর্মী ছাড়াও প্রহৃত হন ওই দেহরক্ষীও।
বেড়মজুর ২ পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান হাজি সিদ্দিকি মোল্লা, সন্দেশখালি পঞ্চায়েতের প্রধান দিলীপ মল্লিক, সন্দেশখালি ২ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি সাফসার আলি মোল্লা-সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছেন বিডিও। মারধর, সরকারি কাজে হস্তক্ষেপ, সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর, অস্ত্র আইন-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। তবে ধরা পড়েনি কেউ। বিডিও বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত প্রধানের নেতৃত্বে অন্তত কুড়ি জন লোক আমার উপরে চড়াও হয়েছিল। তবে মুখ্যমন্ত্রীর উপরে আমার আস্থা আছে। তিনি নিশ্চয়ই দোষীদের গ্রেফতারের ব্যবস্থা করবেন।’’
সন্দেশখালি ব্লক তৃণমূল সভাপতি শেখ সাজাহান অবশ্য হামলার ঘটনায় তৃণমূলের কেউ জড়িত বলে মানতে চাননি। তাঁর কথায়, ‘‘মনে হয় অন্য কারও কথায় প্রভাবিত হয়ে বিডিও আমাদের দলের লোকজনের নামে অভিযোগ করছেন।’’