ফাইল চিত্র।
দলের সরকার ক্ষতিপূরণ দিচ্ছে আবার দলেরই দুর্নাম হচ্ছে— তড়িঘড়ি ত্রাণ পৌঁছনর রাজনৈতিক তাগিই কি এই পরিস্থিতি তৈরি করল? দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ কাটাছেঁড়ায় বসে সে রকমই মনে করছেন তৃণমূলের একাংশ।
আমপানের ক্ষতিপূরণের পরিকল্পনায় ত্রুটির কারণেই এই অনিয়মের সুযোগ তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন শাসকদলের একাংশ। দলের একাধিক জেলা নেতৃত্বই মনে করেন, ক্ষতিপূরণের পরিকল্পনা জরুরি হলেও তার জন্য যথেষ্ট সময় দেওয়া হয়নি। কোথাও কোথাও এই তালিকা তৈরির জন্য মাত্র ২ থেকে ৪ দিন সময় দেওয়া হয়েছিল। ফলে তাড়াহুড়োয় অর্থ বরাদ্দ করতে গিয়েছি পঞ্চায়েত স্তরে পদাধিকারীরা ক্ষতিগ্রস্তের তালিকা তৈরি করে দিয়েছেন নিজেদের পছন্দ মতো। উর্ধতন নেতৃত্ব ও প্রশাসনিক নজরদারির অভাবে সেই সুযোগেই সরকারের বরাদ্দ অর্থের অপব্যবহার করেছেন অনেকে। এ নিয়ে হইচই শুরু হওয়ার পরে সাংগঠনিক স্তরে যে নজরদারি করা হচ্ছে, তা গোড়ায় হলে এই পরিস্থিতি তৈরি হত না বলেই মনে করছেন অনেকে। এক জেলা সভাপতির কথায়, ‘‘প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারি সাহায্য দিতে সব পদক্ষেপ করা হচ্ছে। তবে ক্ষতিপূরণের বরাদ্দে যে অভিযোগ এসেছে তা তালিকায় থাকা প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের তুলনায় অনেক কম।’’
অনেক জায়গায় দেখা গিয়েছে, তালিকার অস্বচ্ছতা নিয়ে শাসকদলের স্থানীয় জনপ্রতিনিধির সঙ্গে বিবাদে যাননি বিডিও বা পুলিশ আধিকারিকেরা। সেক্ষেত্রে ঝাড়াই-বাছাইয়ে স্থানীয় স্তরের বিরোধী দলের প্রতিনিধিত্ব থাকলেও অনিয়ম নিয়ে এই অভিযোগ বা শোরগোল এড়ানো যেত বলেই মনে করছেন তৃণমূলের একটা বড় অংশ। দলের একটু সূত্র জানাচ্ছে, এই অভিযোগের মধ্যে এমন অনেকেই রয়েছেন যাঁরা প্কৃত ক্ষতিগ্রস্ত এবং শাসকদলের সঙ্গেই আছেন। কিন্তু কেবলমাত্র গোষ্ঠী রাজনীতি ও ক্ষমতাসীন অংশের কাছাকাছি না থাকায় তাঁরাও বঞ্চিত হয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। দুই ২৪ পরগনা, নদিয়া, হুগলি, দুই মেদিনীপুর সহ দক্ষিণবঙ্গের কমবেশি সব জেলাতেই ক্ষতিপূরণ বরাদ্দ হয়েছে। তালিকা শুদ্ধকরণের এই প্রক্রিয় শুরু করলেও দলের এক শী৪ষনেতা বলেন, ‘‘রাজনৈতিক স্বার্থেই হাতে গোণা অনিয়মের অভিযোগ নিয়েই শোরগোল চলছে।’’
পঞ্চায়েত ভোটে গা-জোয়ারির অভিযোগে লোকসভা ভোটে বড় ক্ষতি হয়েছিল তৃণমূলের। এবারও দলের অনেকেই মেনে নিচ্ছেন যে ক্ষতিপূরণে অনিয়ম দলের ভাবমূর্তিকে ধাক্কা দিয়েছে। তবে বিধানসভা ভোটের আগেও ক্ষতিপূরণে অনিয়ম যাতে সেই পরিস্থিতি তৈরি করতে না পারে, তার জন্য কঠোর দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং। সেই মতো কাজ শুরু করেছে রাজ্য ও জেলার নেতারা।