বিধ্বস্ত: স্বাস্থ্য ভবনে সঞ্জয় রায়ের স্ত্রী রুবি রায়। ছবি: শৌভিক দে
পাঁচ দিন আগে তাঁর স্বামী মারা গিয়েছেন। বাবাকে হারিয়ে আড়াই বছরের সন্তান সারা দিন মাকে আঁকড়ে রয়েছে। কিন্তু ফুরসত নেই তাঁর। কখনও হাসপাতাল, কখনও থানা, কখনও সাংসদের অফিস, আবার কখনও বা স্বাস্থ্য ভবনে ছুটে বেড়াচ্ছেন। তিনি অ্যাপোলো হাসপাতালে মৃত ডানকুনির বাসিন্দা সঞ্জয় রায়ের স্ত্রী রুবি রায়। এখন তাঁর লড়াই একটাই। স্বামীর মৃত্যুর বিচার চান তিনি।
সঞ্জয় মারা যাওয়ার পরেই যুব তৃণমূলের সভাপতি সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেন রুবি। বুধবার অভিষেক বলেন, ‘‘সুবিচার চেয়ে ওঁদের লড়াইয়ে সম্পূর্ণ ভাবে সঙ্গে আছি।’’ অভিষেকের কথায়— হাসপাতালে রোগীকে ভর্তি করে পরিবার যেন স্বস্তিতে থাকেন, সেখানে সুষ্ঠু চিকিৎসা হবে। হাসপাতালে চিকিৎসার গাফিলতি বা অন্য কোনও অভিযোগ ওঠাটা ঠিক নয়।
বুধবার দুপুরে পরিবারের লোকজনকে নিয়ে স্বাস্থ্য ভবনে এসেছিলেন রুবি। স্বাস্থ্য দফতরের ছয় সদস্যের তদন্ত কমিটি এ দিন তাঁর বয়ান শোনে। দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে চারটে পর্যন্ত কমিটির সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। রুবির সঙ্গে ছিলেন সঞ্জয়ের দিদি-জামাইবাবু সীমা ও রাজেশ পাল এবং সঞ্জয়ের দুই বন্ধু। তদন্ত কমিটি সকলের কথাই শোনে।
আরও পড়ুন:চিঠি, প্যাডে মমতার ছবি দিলেই জেল
পরে সঞ্জয়ের জামাইবাবু রাজেশ পাল বলেন, ‘‘দুর্ঘটনার পরে কখন সঞ্জয়কে রাস্তা থেকে তুলে বালটিকুরি ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, সেখানে তিনি কত ক্ষণ ছিলেন, অ্যাপোলোয় কখন আনা হয়, সেখানকার কর্মীদের ব্যবহার কেমন ছিল, সবটাই জানতে চান তদন্তকারীরা।’’ স্বাস্থ্য কর্তারা জানান, এ দিন মৌখিক ভাবে সঞ্জয়ের পরিবারের লোকেরা যা জানিয়েছেন, লিখিত ভাবে সেটাই তাঁদের স্বাস্থ্য ভবনে জমা দিতে বলা হয়েছে।
স্বাস্থ্য ভবন থেকে বেরিয়ে এ দিন দাশনগর থানায় যান সঞ্জয়ের পরিবারের লোকেরা। যে হেতু দুর্ঘটনাটি ওই থানা এলাকাতেই হয়েছিল, সেই কারণে ওই থানায় একটি অভিযোগ জমা দেওয়ার কথা ছিল তাঁদের।
এ দিন পুলিশও অ্যাপোলোর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্তে গতি এনেছে। যে চিকিৎসকের অধীনে সঞ্জয় ভর্তি হয়েছিলেন, সেই শ্যামল সরকার ফুলবাগান থানায় চিকিৎসা-সংক্রান্ত সমস্ত নথি জমা দিতে যান। ঘণ্টা খানেক চলে জিজ্ঞাসাবাদ।