মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।—ফাইল চিত্র।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতার আসার ন’বছর পর তাঁর নিরাপত্তা বলয় থেকে পাঁচ জন রেলরক্ষীকে (আরপিএফ) ছেড়ে দিল নবান্ন। গত ডিসেম্বরে নিরাপত্তায় থাকা সাত জন রেলরক্ষীর মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ‘বদলি প্রশিক্ষিত রক্ষী’ না পাওয়া পর্যন্ত তাঁদের ছাড়া হবে না বলে সে সময় রেল মন্ত্রককে জানিয়েছিল নবান্ন। কিন্তু সম্প্রতি নিরাপত্তা অধিকর্তা বিনীত গয়াল তাঁদের মধ্যে পাঁচ জনকে আরপিএফে ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছেন। তবে দু’জনকে ছাড়ার ব্যাপারে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি বলে নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে।
নবান্নের ওয়াকিবহাল মহলের অনেকেই এই ঘটনার পিছনে কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের ‘মধুর’ সম্পর্কই দেখতে পেয়েছেন। তবে মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা জওয়ানদের কেউ কেউ দাবি করেছেন, রাজ্য পুলিশের সঙ্গে রেলরক্ষীদের ‘ডিউটির ভাগাভাগি’ নিয়ে মতান্তরের জেরেই আরপিএফে ফেরত যেতে হয়েছে ওই পাঁচ জনকে। তবে স্বপন মণ্ডল নামে রেলের এক এএসআই এখনও থাকছেন। তিনি অবশ্য মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে কর্মরত। রেলরক্ষী বাহিনী থেকে অবসর নেওয়া অশোক চক্রবর্তীও মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার তদারকিতে থাকবেন বলে নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে।
২০১১ সালে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার আগে তদানীন্তন রেলমন্ত্রী মমতার নিরাপত্তায় আরপিএফের ২০ জন অফিসার এবং জওয়ান ছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে নিজের নিরাপত্তার জন্য তাঁদেরই সঙ্গে নিয়ে আসেন মমতা। প্রথম দিকে এই রাজ্যের পুলিশকে ধারে কাছে ঘেঁষতেও দিতেন না মুখ্যমন্ত্রী। পরে আরপিএফ জওয়ানেরা একে একে মূল কাজের জায়গায় ফিরে যেতে শুরু করেন। সাত জনকে মুখ্যমন্ত্রী রেখে দিয়েছিলেন। ২০১৬-র ডিসেম্বরে ওই সাত জনের ডেপুটেশনের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল।
নবান্ন সূত্রের খবর, আরপিএফের এএসআই স্বপন মণ্ডল, দুই জওয়ান দেবপ্রতিম বন্দ্যোপাধ্যায় ও বদরদুজ্জা ১৯৯৮ সাল থেকে মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন। সেই সময়েও মমতা রেলমন্ত্রী ছিলেন। ২০০৮ সাল থেকে ছিলেন দেবনাথ চট্টোপাধ্যায়, পবিত্র মণ্ডল এবং স্বপন দত্ত নামে তিন জওয়ান। ২০১১ সালে বহাল হন আরপিএফের এর এক অফিসার অশোক চক্রবর্তী। এঁরা মমতার নিরাপত্তায় ছিলেন রেল থেকে ডেপুটেশন নিয়ে। সাধারণত দু’বছর ডেপুটেশনে থাকার পরে মূল চাকরিতে ফিরে যাওয়ার কথা অফিসার ও জওয়ানদের। অন্যরা ফিরে গেলেও এই সাত জনের জন্য এত দিন সেই নিয়ম কার্যকর হয়নি। ২০১৮-র ডিসেম্বরে সেই মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল। রেল ওই রক্ষীদের ফেরত চাইলে নবান্ন সেই সময় অনুরোধ রাখেনি।