ভাইরাল ভিডিয়োর দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত।
স্কুলের মধ্যে প্রধানশিক্ষক এবং সহ-শিক্ষক জড়ালেন হাতাহাতিতে। চলল দেদার গালাগালিও। এক দল পড়ুয়ার মাঝে দুই শিক্ষকের মারামারিতে চাঞ্চল্য বর্ধমানের-২ ব্লকের হাটগোবিন্দপুর হাই স্কুলে। দুই শিক্ষকের গন্ডগোল থামাতে স্কুলে ছুটে যেতে হয়েছে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি থেকে হাটগোবিন্দপুর ফাঁড়ির পুলিশকে। এমন ঘটনার প্রতিবাদে প্রধানশিক্ষককের কাছে ডেপুটেশন জমা দিলেন স্কুলের বেশ কয়েক জন প্রাক্তনী। তাঁদের যুক্তি, স্কুলের মধ্যে এক জন শিক্ষক যে ভাবে প্রধানশিক্ষককের সঙ্গে হাতাহাতি করছেন, অশালীন কথা বলছেন, তাতে পড়ুয়াদের মধ্যে বিরূপ প্রভাব পড়ছে। ইতিমধ্যে সমাজমাধ্যমে ভাইরাল মারামারির ভিডিয়ো (ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন)।
স্থানীয় সূত্রে খবর, হাটগোবিন্দপুর হাই স্কুলের ওই মারামারির ঘটনাটি গত ১৩ সেপ্টেম্বরের। প্রধানশিক্ষকের সঙ্গে সহ-শিক্ষকের মারামারির দৃশ্য কেউ ক্যামেরাবন্দি করেছিলেন। সম্প্রতি তা ছড়িয়ে পড়েছে সমাজমাধ্যমে। সেখান থেকে শুরু হয়েছে বিতর্ক।
ওই স্কুল সূত্রে খবর, অটোমোবাইল বিষয়ের শিক্ষক কৃষ্ণেন্দু রায় বেশ কয়েক দিন হল সময় মতো স্কুলে আসছেন না। এ নিয়ে বার কয়েক প্রধানশিক্ষক অশোককুমার জোয়ারদার তাঁকে সাবধান করেছেন। কিন্তু জোর দ্বন্দ্ব শুরু হয় গত ১৩ সেপ্টেম্বর। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক জন শিক্ষক জানাচ্ছেন, সে দিনও দেরি করে স্কুলে এসেছিলেন কৃষ্ণেন্দু। এ নিয়ে প্রধানশিক্ষক তাঁর সঙ্গে কথা বলতে যেতেই শুরু হয় বচসা। তর্কাতর্কি থেকে একে অন্যের গায়ে হাতে তুলতে বেশি সময় নেননি দু’জন। প্রধানশিক্ষক এবং সহ-শিক্ষকের লড়াই থামাতে ছুটে আসেন অন্য শিক্ষকেরা। কিন্তু রীতিমতো বেগ পেতে হয় তাঁদের। ছড়িয়ে পড়া ভিডিয়োয় একে অপরের উদ্দেশে কুকথাও বলতে শোনা যায় দু’জনকে।
এই বিষয়ে স্থানীয় তৃণমূল নেতা দেবু টুডু বলেন, ‘‘শিক্ষাঙ্গনে এমন ঘটনা দুঃখজনক। শিক্ষকেরা সমাজের মেরুদণ্ড। তাঁরা দায়িত্বশীল মানুষ। এই দৃশ্য দেখার পর মনে হচ্ছে তাঁদের আরও দায়িত্বশীল হতে হবে।’’ অন্য দিকে, জেলা বিজেপির মুখপাত্র সৌমরাজ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, ‘‘আজকাল শিক্ষাব্যবস্থা এমন জায়গায় গিয়ে পৌঁছেছে যে, শিক্ষকরা নিজেদের মধ্যে মারামারিতে জড়াচ্ছেন। আসলে শিক্ষা বলে কিছু নেই। সব কিছুতেই এখন ভাগবাঁটোয়ারার ব্যাপার।’’
ছড়িয়ে পড়া ভিডিয়ো নিয়ে প্রধানশিক্ষক এবং সহ-শিক্ষক কেউ কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে রাজি হননি। অন্য দিকে, ভবিষ্যতে যেন এমন ঘটনা না ঘটে, সেই দাবিতে স্কুলে একটি ডেপুটেশন জমা দিয়েছেন স্থানীয়রা।