ভাসছে মরা মাছ। নিজস্ব চিত্র
ভাসছে মরা মাছ। দুর্গন্ধ আটকানো যাচ্ছে না নাকে রুমাল দিয়েও। গোসাবার দ্বীপে ছড়াচ্ছে দূষণ আর পেটের রোগ।
দুর্যোগের পরে তিন দিন কেটে গেলেও অনেক জায়গায় বাঁধ সারানো যায়নি। ফলে, রোজই এলাকায় ঢুকছে নোনা জল। গোটা ব্লক কার্যত জলবন্দি। নোনা জলে মাছের মড়ক শুরু হয়েছে। পুকুর, খাল, বিল— সর্বত্রই ভাসতে দেখা যাচ্ছে মরা মাছ। পচা গন্ধে ভরে গিয়েছে গোটা দ্বীপ।
অভিযোগ, মরা মাছ সরিয়ে নেওয়ার পদক্ষেপ করেনি প্রশাসন। জোটেনি ব্লিচিং পাউডারও। অগত্যা, কিছু জায়গায় পচা-গলা মাছ তুলে রাস্তার ধারে উচুঁ জমিতে গর্ত করে পুঁতে দিচ্ছেন গ্রামবাসীরা। আরামপুরের বাসিন্দা সঞ্জীব ঘোড়ুই ও রতন মণ্ডল বলেন, ‘‘দুর্গন্ধে এলাকায় থাকা যাচ্ছে না। ঘরবাড়ি সব জলের তলায়। রাস্তার উপরে পলিথিন খাটিয়ে রয়েছি। খাবার ও পানীয় জলের আকাল। তার মধ্যে পচা মাছের দুর্গন্ধে শ্বাস নিতে পারছি না।’’ সুধীর নাথ নামে আর এক গ্রামবাসীর অভিযোগ, ‘‘প্রশাসনের ভরসায় থেকে লাভ হয়নি। তাই, নিজেরাই মাছ সরাতে শুরু করেছি।’’ প্রশাসনের এক আধিকারিক অবশ্য বলেন, ‘‘এখন ত্রাণ দেওয়ার কাজেই বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।’’ তবে তৃণমূল পরিচালিত গোসাবা পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি কৈলাস বিশ্বাস বলেন, ‘‘দলের বুথ কমিটিগুলিকে পচা মাছ তুলে মাটিতে পুঁতে দেওয়ার জন্য উৎসাহিত করা হচ্ছে। যত দ্রুত সম্ভব কাজ শেষ করা হবে।’’
গ্রামবাসী জানাচ্ছেন, শুধু মাছই নয়, নোনা জলে পচতে শুরু করেছে গাছ, পাতা ও আবর্জনা। বেড়েছে পোকামাকড়ের উৎপাতও। অনেক জায়গায় পেটের অসুখ ছড়িয়েছে। ব্লক স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, পেটের রোগে আক্রান্তের সংখ্যা সব থেকে বেশি ছোট মোল্লাখালিতে। কুমিরমারি, আমতলি, রাধানগর-তারানগর এবং গোসাবা রাঙাবেলিয়াতেও পেটের রোগ ছড়াচ্ছে বলে খবর। পরিস্থিতি সামলাতে জল পরিস্রুত করার ওষুধ দেওয়া হচ্ছে। ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক (গোসাবা) ইন্দ্রনীল বর্গী বলেন, ‘‘ব্লকের সব দ্বীপেই অনেক মানুষ পেটের অসুখে ভুগছেন বলে খবর এসেছে। এক লক্ষ হ্যালোজেন ট্যাবলেট দেওয়া হয়েছে। আরও এক লক্ষ দেওয়া হবে। আশাকর্মী ও স্বাস্থ্যকর্মীরা ঘুরে ঘুরে মানুষজনকে ওই ট্যাবলেট-এর ব্যবহার শেখাচ্ছেন।’’ প্রশাসনের দাবি, প্লাবিত এলাকায় পানীয় জল ও শুকনো খাবার পৌঁছে দেওয়ার উপরেই বেশি জোর দেওয়া হয়েছে। দেওয়া হচ্ছে
ব্লিচিং পাউডারও।