রোজ ভ্যালি তদন্ত

শুভ্রাকে জেরা, এর পর ইডি-কর্তা

রোজ ভ্যালি-র কর্ণধার গৌতম কুণ্ডুর স্ত্রী শুভ্রা কুণ্ডুর সঙ্গে তাঁর ছবি প্রকাশ্যে আসার পরেই মঙ্গলবার তদন্তের দায়িত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছিল ইডি-র অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর মনোজ কুমারের কাছ থেকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০০:৫৬
Share:

রোজ ভ্যালি-র কর্ণধার গৌতম কুণ্ডুর স্ত্রী শুভ্রা কুণ্ডুর সঙ্গে তাঁর ছবি প্রকাশ্যে আসার পরেই মঙ্গলবার তদন্তের দায়িত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছিল ইডি-র অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর মনোজ কুমারের কাছ থেকে। সেই রাতেই লালবাজার ওই অফিসারের সম্পর্কে একটি বিশদ রিপোর্ট পাঠায় ইডি-কে। তার ভিত্তিতে বুধবার মনোজ কুমারকে সাসপেন্ড করা হয় বলে ইডি সূত্রের খবর। পাশাপাশি এ দিনই কলকাতা পুলিশের ৪ সদস্যের একটি বিশেষ তদন্ত দল শুভ্রাদেবীর প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডের বাড়িতে গিয়ে তিন ঘণ্টা জেরা করেন। তদন্তের স্বার্থে মনোজ কুমারকেও তাঁরা জেরা করবেন বলে লালবাজার সূত্রের খবর।

Advertisement

বুধবার সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে নিজের দফতরে গিয়েছিলেন মনোজ কুমার। তাঁর হাতে বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থার ৭টি মামলার তদন্তভার ছিল। এর মধ্যে রোজ ভ্যালি ও সারদার মতো একাধিক সংস্থার বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছেন তিনি। কিন্তু সেই তদন্ত চলাকালীন কী ভাবে অন্যতম অভিযুক্তের স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর সখ্য গড়ে উঠল, এতে তদন্ত কোনও ভাবে প্রভাবিত হয়েছে কি না, সে সব খতিয়ে দেখতে আজ, বৃহস্পতিবার ইডি-র তিন সদস্যের একটি বিশেষ দল কলকাতায় এসে মনোজ কুমারের সঙ্গে কথা বলবেন। তার আগে ওই সাসপেন্ডেড অফিসারের কাছে থাকা তদন্তের যাবতীয় নথিপত্র এ দিন নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে ইডি।

গত ১৫ ডিসেম্বর রাতে মধ্য কলকাতার ম্যাঙ্গো লেনের একটি বেসরকারি সংস্থার অফিস থেকে বেআইনি আর্থিক লেনদেনের অভিযোগে ৩ জনকে গ্রেফতার করে লালবাজারের গোয়েন্দারা। উদ্ধার হয় পুরনো ৫০০ এবং ১০০০-র নোটে ১ কোটি ৪২ লক্ষ টাকা। পুলিশ জানিয়েছে, ম্যাঙ্গো লেনের ওই সংস্থার কম্পিউটারের হার্ড ডিস্ক ঘেঁটে ‘রোজ ভ্যালি’ ও ‘ম্যাডাম রোজ ভ্যালি’ নামে যে দু’টি ফোল্ডার পাওয়া যায়, সেখান থেকেই ১৫ কোটি টাকা তছরুপের বিষয়টি সামনে আসে। লালবাজারের বক্তব্য, ওই টাকা ঘুরপথে পাচার হয়েছে এবং এতে শুভ্রাদেবী ও মনোজ কুমারের যোগসাজস রয়েছে।

Advertisement

এই তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যেতে ২০ সদস্যের বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করেছে লালবাজার। সেখানে স্পেশাল টাস্ক ফোর্স-এর গোয়েন্দাদের রাখা হয়েছে। কলকাতা পুলিশ সূত্রের খবর, বাজার থেকে তোলা টাকা কী ভাবে পাচার হয়েছে এবং তদন্ত প্রভাবিত করতে শুভ্রাদেবীর কী ভূমিকা ছিল, গত দেড় মাস ধরে তা খতিয়ে দেখেছে লালবাজার। বেশ কিছু নথিও সংগ্রহ করেছে কলকাতা পুলিশ। এ দিন সেই সব সামনে রেখেই জেরা করা হয় শুভ্রাদেবীকে। কলকাতা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত গোয়েন্দা প্রধান বিশাল গর্গ বলেন, ‘‘প্রয়োজনে ফের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে শুভ্রাদেবীকে।’’ শুভ্রাদেবী জেরা নিয়ে মুখ খুলতে চাননি। তাঁর মোবাইলে ফোন করা হলে সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পরে ফোন কেটে দেন তিনি।

এ দিনই হাসপাতাল থেকে জেলে ফিরেছেন গৌতম কুণ্ডু। শারীরিক অসুস্থতার জন্য প্রেসিডেন্সি জেল হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন রোজ ভ্যালি কর্তা। সপ্তাহ খানেক আগে তাঁকে এসএসকেএমে ভর্তি করা হয়। বুধবার তাঁকে এসএসকেএম থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। সূত্রের খবর, সিবিআই কর্তারা তাঁকে ভুবনেশ্বর নিয়ে যাওয়ার অনুমতি চেয়ে আদালতে আবেদন করেছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement