মৃত অরুণ শর্মা।
বিধি মানতে প্রশাসন যতই কড়াকড়ি করুক, বেপরোয়া মোটরবাইক চালকেরা যে তাতে কান দিচ্ছেন না, প্রাণ দিয়ে বৃহস্পতিবার সেটা প্রমাণ করে গেলেন বালি-নিশ্চিন্দার এক তরুণ। হেলমেট না-পরে মদ্যপ অবস্থায় বাইক নিয়ে কেরামতি দেখাতে গিয়ে ধাক্কা মারলেন বাসস্ট্যান্ডে। নিজের মৃত্যু ডেকে তো আনলেনই। গুরুতর আহত হলেন তাঁর দুই সঙ্গীও।
পুলিশ জানায়, মৃতের নাম অরুণ শর্মা (২০)। বাড়ি নিশ্চিন্দার সাঁপুইপাড়ায়। তাঁর আহত দুই সঙ্গীর নাম অজয় পাসোয়ান ও রাজন ভারতী। তাঁদেরও বয়স কুড়ি-একুশ। দু’জনেই আশঙ্কাজনক অবস্থায় শ্রমজীবী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
গত সপ্তাহেই ‘সেভ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ অনুষ্ঠানে পথ-নিরাপত্তার উপরে জোর দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মোটরবাইক চালকেরা যাতে সতর্ক হতে বাধ্য হন, সেই জন্য হেলমেট না-থাকলে পেট্রোল পাম্পগুলিকে তেল বেচতে নিষেধ করেছেন তিনি। রাস্তায় বা উড়ালপুলে মোটরবাইকের কেরদানি দেখানো বা প্রতিযোগিতা বন্ধ করতে হবে বলেও নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশকে। কিন্তু বাইক-দৌড় বন্ধ হচ্ছে না। পুলিশকর্তাদের একাংশ বলছেন, যারা একটু কম বেপরোয়া, তারা বিধিনিষেধ মানার নামে সস্তার হেলমেট কিনে বা এক হেলমেট বদলাবদলি করে তেল জোগাড় করে নিচ্ছে। তাতে বিপদ আদৌ কমছে না। আর যারা পথ-বিধিকে বুড়ো আঙুল দেখাতেই অভ্যস্ত, তারা সেটা করেই চলেছে। শুধু তা-ই নয়, তারা কতটা বেপরোয়া হতে পারে, বিশেষ করে রাতের রাস্তায় হেলমেট ছাড়া বাইক-দৌড়ে নেমে, বাইকবাজি করে তার প্রদর্শনীও চালিয়ে যাচ্ছে সমানে।
কী ঘটেছিল বৃহস্পতিবার রাতে?
ভাস্করগোপাল চট্টোপাধ্যায় নামে এলাকার এক তৃণমূল নেতা জানান, তাঁরা একটি পেট্রোল পাম্পে দাঁড়িয়ে ছিলেন। হঠাৎ বাসস্ট্যান্ডে জোর সংঘর্ষের আওয়াজ পেয়ে ছুটে গিয়ে দেখেন, তিন তরুণ রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে আছেন। গড়াগড়ি খাচ্ছে তাঁদের বাইক। তাঁরাই তিন জনকে শ্রমজীবী হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে অরুণকে মৃত ঘোষণা করা হয়। পুলিশ জানায়, মদ্য পান করে এবং হেলমেট না-পরেই জি টি রোডে বাইকের কেরামতি দেখাচ্ছিলেন তিন তরুণ। বালি থেকে বেলুড়ের দিকে যাওয়ার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাদামতলার বাসস্ট্যান্ডে প্রচণ্ড জোরে ধাক্কা মারে বাইকটি। হেলমেট না-থাকায় মাথা ফেটে যায় অরুণের।