ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়
এগোতে গিয়ে বিতর্ক। আবার দাঁড়িয়ে প়়ড়়াও অসম্ভব! আপাতত তাই মধ্যপন্থায় থাকছে আলিমুদ্দিন।
সাসপেনশনের ঘোষণা হয়েছে দে়ড় মাস আগে। তদন্ত কমিশনের কাজে গতি এসেছে সবে। কিন্তু এর মধ্যে দলের প্রায় সব কাজকর্ম থেকেই নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন সিপিএমের তরুণ সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। এক উঠতি সাংসদকে কেন এ ভাবে কোণঠাসা করে ফেলছে তাঁর নিজেরই দল, এই প্রশ্নে ঘরের ভিতরে-বাইরে বিতর্ক বিস্তর। সমস্যা বুঝে আলিমুদ্দিনের কর্ণধারেরা এখন চাইছেন, দ্রুত কাজে ফিরুন ঋতব্র ত। কমিশন যেমন চলছে, চলুক। কিন্তু তার জন্য অভিযুক্ত সাংসদের নিজেকে গুটিয়ে রাখার দরকার নেই, এমনই মনোভাব সূর্যকান্ত মিশ্র, বিমান বসুদের।
ব্যক্তিগত জীবন সংক্রান্ত কিছু বিষয় এবং সংবাদমাধ্যমে খবর ফাঁস করার অভিযোগে ঋতব্রতকে দল থেকে তিন মাসের জন্য সাসপেন্ড করেছে সিপিএমের রাজ্য কমিটি। তিন সদস্যের কমিশনের কাছে অভিযোগ বিচারাধীন। রাজ্য কমিটির কাছে কমিশনের রিপোর্ট জমা পড়ার কথা ২ অগস্টের মধ্যে। প্রাথমিক শাস্তি ঘোষণার সময়েই রাজ্য কমিটিতে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, সাংসদ হিসাবে স্বাভাবিক দায়িত্ব পালন করবেন ঋতব্রত। অন্য সময়ে দিল্লিতে সংসদের কাজকর্ম ছাড়াও রাজ্যের নানা জেলায় রক্তদান শিবির, পুস্তক শিবির থেকে শুরু করে জনসভা— নানা কাজে ব্যবহার করা হচ্ছিল তাঁকে। কিন্তু শাস্তি ঘোষণার পরে সে সব থেকে একেবারেই সরে দাঁড়িয়েছেন ঋতব্রত। বরং, নিখাদ শিক্ষামূলক সংগঠনের যোগাযোগে সেরে এসেছেন লম্বা চিন সফর।
সিপিএমের নেতা-কর্মীদের একাংশ তো বটেই, অন্যান্য দলের কিছু নেতাও ঋতব্রতের এই ‘অন্তর্ধান’ নিয়ে সরব হয়েছেন নানা মাধ্যমে। সিপিএম আরও কড়া পদক্ষেপ করে ঋতব্রতকে ছেঁটে ফেললে তাঁরা হাত বাড়িয়ে দেবেন, এমন প্রস্তাবও ভাসিয়ে রেখেছেন অন্যান্য দলের কিছু নেতা! তাঁরা রাজ্যসভার পারফরম্যান্সের সুবাদে চেনেন সিপিএম সাংসদকে। বিষয়টি অস্বস্তিকর জায়গায় যাচ্ছে এবং জাতীয় স্তরে সিপিএমের কণ্ঠই আরও ক্ষীণ হচ্ছে বলে মনে করছেন স্বয়ং দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। একই কারণে সুর্যবাবু, বিমানবাবুরাও চাইছেন, ফের সক্রিয় হোন ঋতব্রত।
দলের ‘অভ্যন্তরীণ বিষয়’ বলে সিপিএমের রাজ্য নেতাদের কেউ এ ব্যাপারে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে রাজি নন। রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্য শুধু এটুকুই বলছেন, ‘‘কমিশন তার কাজ করে ফেলবে। কিন্তু সেটার জন্য অন্য কোনও কাজই আটকে থাকার কথা নয়।’’ যোগাযোগ করা যায়নি ঋতব্রতের সঙ্গে। তবে দলীয় সূত্রের খবর, অভিযুক্তের সঙ্গে অভিযোগকারীদের মুখোমুখি বসিয়ে শুনানির ভাবনা এখনও নেই কমিশনের।