রেজাউল করিম।
রাজ্যের শাসক দলের বিরোধী হিসেবে পরিচিত চিকিৎসক সংগঠন ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টর্স ফোরাম (ডব্লিউবিডিএফ)-এর নেতা রেজাউল করিম তৃণমূলে যোগ দিলেন। গত লোকসভা ভোটে তিনি বীরভূমে সিপিএম প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হন। বুধবার রেজাউল ছাড়াও তৃণমূলে এসেছেন ফোরামের সম্পাদক কৌশিক চাকী। পাশাপাশি, বর্ধমানের প্রাক্তন সিপিএম নেতা আইনুল হকও এ দিন তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। বাম আমলে দোর্দণ্ডপ্রতাপ আইনুল বর্ধমান পুরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন। পরে দল তাঁকে বহিষ্কার করলে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন।
রেজাউল তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হাত থেকে দলীয় পতাকা নিয়েছেন জানার পরেও অবশ্য রাজ্যের স্বাস্থ্যক্ষেত্রে ‘প্রভাবশালী’ হিসেবে পরিচিত একাধিক সরকারি-বেসরকারি চিকিৎসকের প্রতিক্রিয়ায় কোনও বিস্ময় নেই। তাঁদের বক্তব্য, এমনটা যে ঘটতে চলেছে, সেই ইঙ্গিত আগেই ছিল। তবে কৌশিক চাকীও যে তৃণমূলে নাম লেখাবেন, তা অনেকেই আঁচ করতে পারেননি। ফলে তৃণমূলের দুই চিকিৎসক নেতা শান্তনু সেন, নির্মল মাজির অবস্থান কী হবে, তা নিয়ে বঙ্গ চিকিৎসক সমাজে জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে।
ফোরামের সমর্থক চিকিৎসকদের একাংশের বক্তব্য, কর্মক্ষেত্রে চিকিৎসকদের সমস্যাগুলি তুলে ধরার প্রশ্নে আক্রমণাত্মক অবস্থান এবং সেই সূত্রে সরকারি বিরোধিতার স্বর হিসেবে সংগঠনের পরিচিতি গড়ে উঠেছিল। ডেঙ্গি নিয়ে ফেসবুকে সরকার-বিরোধী পোস্ট করায় চিকিৎসক অরুণাচল দত্ত চৌধুরীকে (যাঁর এ দিনের ফেসবুক পোস্টও ইঙ্গিতবাহী) সাসপেন্ড করেছিল স্বাস্থ্য দফতর। সেই ঘটনায় পথে নামার পাশাপাশি জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছে ফোরাম। এক চিকিৎসকের কথায়, ‘‘ডব্লিউবিডিএফের জন্মলগ্নে সরকার বিরোধিতার ডিএনএ রয়েছে। যার সঙ্গে দুই চিকিৎসকের তৃণমূলে যোগদান বেমানান।’’
আরও পড়ুন: চিন্তা বাড়াল দৈনিক মৃতের সংখ্যা, সামান্য কম সংক্রমণের হার
এ দিন ফোরামের এক শীর্ষ পদাধিকারী বলেন, ‘‘আমপানের পরই সরকারের সঙ্গে যোগাযোগের সেতু তৈরি হয়।’’ তাঁর আশা, আগামী দিনে শাসক দলের প্রতিনিধি হিসেবে রেজাউলই বাংলার চিকিৎসকদের প্রথম পছন্দ হবেন। যার প্রেক্ষিতে তৃণমূলের চিকিৎসক নেতা তথা আইএমএ’র রাজ্য সম্পাদক শান্তনু সেন বলেন, ‘‘ফোরামের অস্তিত্ব মূলত সোশ্যাল মিডিয়ায়। সুতরাং তার পরিণতি নিয়ে চিন্তার কিছু নেই।’’
আরও পড়ুন: পরিযায়ী-প্রশ্নে রাজ্যে আন্দোলনে কংগ্রেস
এ দিন দুপুর থেকে রেজাউল করিমের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা হয়। কিন্তু তাঁর দু’টি মোবাইলই বন্ধ ছিল। কৌশিক চাকী বিবৃতিতে জানিয়েছেন, শাসক দলের শরিক হওয়ায় সরাসরি চিকিৎসকদের দাবিগুলি সুসংহত ভাবে উপস্থাপিত করা যাবে। তবে ফোরামের সভাপতি অর্জুন দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘ডব্লিউবিডিএফ অরাজনৈতিক সংগঠন ছিল এবং থাকবে। এই সংগঠন থেকে যে কেউ তাঁর পছন্দমতো রাজনৈতিক দলে যোগ দিতে পারেন। কিন্তু তিনি পদাধিকারী থাকবেন না।’’