ভোটে ধাক্কা, জঙ্গলমহলে রদবদল তৃণমূলে

মাথা এক রেখে অবশেষে জঙ্গলমহলে দলীয় নেতৃত্বের খোলনলচে বদলে ফেললেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০১৮ ০৫:৫৬
Share:

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।

মাথা এক রেখে অবশেষে জঙ্গলমহলে দলীয় নেতৃত্বের খোলনলচে বদলে ফেললেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

পঞ্চায়েত ভোটের ফলের পর দলীয় অন্তর্তদন্তে আদিবাসী ‘ক্ষোভে’র ইঙ্গিত মিলেছিল। সোমবার সাংগঠনিক রদবদলে দেখা গেল, মাহাতো সম্প্রদায়ের নেতাদের গুরুত্ব বেড়েছে। ঝাড়গ্রাম জেলায় মোট আটটি ব্লক। এর মধ্যে তিনটি ক্ষেত্রে সভাপতি পদে পরিবর্তন হয়নি। কিন্তু যে পাঁচটি ব্লকে বদল হয়েছে তার মধ্যে চারটি ক্ষেত্রেই ব্লক সভাপতি হিসাবে বেছে নেওয়া হয়েছে মাহাতো সম্প্রদায়ের নেতাকে।

ঝাড়গ্রাম জেলার বাছাই করা কিছু নেতা ও কর্মীকে এ দিন কালীঘাটে ডেকে পাঠিয়ে ব্লক স্তরে রদবদল করেন মমতা। জেলা সভাপতি রাখা হয়েছে অজিত মাইতিকেই। কিন্তু সাঁকরাইল, লালগড়, বেলপাহাড়ি, ঝাড়গ্রাম এবং জামবনি ব্লকের তৃণমূল সভাপতি বদলে দেওয়া হয়েছে। দলীয় সূত্রের খবর, বেআইনি বালি খাদান সংক্রান্ত অভিযোগ ওঠায় বছর দেড়েক আগে সাঁকরাইল ব্লক তৃণমূলের সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল সোমনাথ মহাপাত্রকে। এ বার পঞ্চায়েত ভোটে সাঁকরাইল পঞ্চায়েত সমিতি হাতছাড়া হওয়া পর তপন পট্টনায়ককে সরিয়ে ফের পুরনো পদে আনা হল সোমনাথবাবুকে। লালগড়ে ব্লক সভাপতি বনবিহারী রায়কে সরিয়ে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে একদা ছত্রধর মাহাতোর ছায়াসঙ্গী শ্যামল মাহাতোকে। বেলপাহাড়ি ব্লকের নতুন সভাপতি হয়েছেন চিন্ময় মাহাতো ওরফে বুবাই। তিনি বেলপাহাড়ি ব্লক যুব তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি ছিলেন। বেলপাহাড়ি ব্লক তৃণমূলের সভাপতি পদ থেকে সরানো হয়েছে বংশীবদন মাহাতোকে। ঝাড়গ্রাম ব্লকে বর্ষীয়ান নেতা অনিল মণ্ডলের পরিবর্তে বেছে নেওয়া হয়েছে রবীন্দ্রনাথ মাহাতোকে। জামবনি ব্লকের সভাপতি পদে জগদীশ মাহাতোকে সরিয়ে নিশীথ মাহাতোকে আনা হয়েছে।

Advertisement

এ বার গোপীবল্লভপুর-১ পঞ্চায়েত সমিতিও হাতছাড়া হয়েছে তৃণমূলের। তবে এই ব্লকের সভাপতি সিংরাই মুর্মুকে সরানো হয়নি। পদ রয়েছে গোপীবল্লভপুর-২ ব্লক সভাপতি কালীপদ শূরেরও। নয়াগ্রাম ব্লক সভাপতির পদ থেকে দুলাল মূর্মুকেও সরানো হয়নি। বৈঠকে মমতা জানান, ওই তিনটি ব্লকে পরে সভাপতি বদল হবে। যে তিনজনের পদ আপাতত রইল তাঁদের মধ্যে দু’জনই আদিবাসী নেতা।

ব্লক স্তরের পরিবর্তনে যেমন অপেক্ষাকৃত তরুণ নেতাদের সুযোগ দেওয়া হয়েছে, তেমনই রয়েছে ভারসাম্যের অঙ্কও। মাওবাদী হিংসা-পর্বে ছত্রধরের একদা ছায়াসঙ্গী শ্যামলকে যেমন নতুন দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তেমনই মাওবাদী বিরোধী জনজাগরণ মঞ্চের নেতা নিশীথও পেয়েছেন নতুন ক্ষমতা। এ দিন দলের এসটি এসসি সেলের জেলা সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে অর্জুন হাঁসদাকে। এই পদে আগে ছিলেন দুলাল মুর্মু। দলের মহিলা সংগঠন দেখার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে নয়াগ্রামের তরুণ নেত্রী সঞ্চিতা ঘোষকে। পরে কোনও পরিবর্তন না হলে প্রায় সম্পূর্ণ নতুন টিম নিয়ে লোকসভা ভোটের লড়াইয়ে নামতে হবে অজিতবাবুকে। তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘দলের স্বার্থে নেত্রীর এই সিদ্ধান্ত ঝাড়গ্রাম জেলায় দলের পক্ষে খুব শুভ হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement