কণা সরকার রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী।
কোনও কাজই যে ছোট নয় সেটা বোঝাতে তেলেভাজা বিক্রিকে ‘চপশিল্প’ বলে উল্লেখ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই কথাতেই অনুপ্রাণিত হয়ে গ্রামীণ চপশিল্প কী ভাবে সংসার চালাতে সাহায্য করে তা নিয়ে গবেষণা করলেন মালদহের মেয়ে কণা সরকার। স্নাতকোত্তর পরীক্ষার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি গবেষণাপত্র জমা দিয়েছেন কণা। তিনি রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের চতুর্থ সেমেস্টারের ছাত্রী। তাঁর গবেষণার বিষয়, ‘গ্রামীণ চপশিল্প এবং সংসার পরিচালনায় তার প্রভাব’। গবেষণার এ কাজ তিনি করেছেন মালদহ জেলার গাজোল-১, গাজোল-২ এবং করকোচ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়।
গবেষণার বিষয়টি কণা একা বেছে নেননি। বিষয়টি বেছে নিতে সাহায্য করেছেন তাঁর ‘গাইড’ তথা ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের অধ্যাপক তাপস পাল। কেন এমন বিষয় বাছলেন? আনন্দবাজার অনলাইনকে মঙ্গলবার তাপস বলেন, ‘‘আমাদের অর্থনীতিতে ৮৩ শতাংশ মানুষ অসংগঠিত ক্ষেত্রে কাজ করেন। এই শ্রেণিতে রিকশাওয়ালা, টোটোওয়ালা থেকে তেলেভাজা বিক্রেতারা রয়েছেন। এই অংসগঠিত ক্ষেত্রকে তো ফিরিয়ে আনতে হবে। যাঁরা চপ বিক্রি করেন, তাঁদের কত টাকা উপার্জন হয়? এর তো কোনও নির্ভরযোগ্য তথ্য আমাদের কাছে নেই। সেটার জন্যই গবেষণা করা দরকার। এই গবেষণা থেকে জানা গিয়েছে, মহিলারা তেলেভাজা বিক্রি করে মাসে ৯ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করেন। পুরুষদের ক্ষেত্রে সেই আয় ১৫ হাজার টাকার মতো।’’
কিন্তু গবেষণাপত্রের উপরে ‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চপশিল্প ধারণায় অনুপ্রাণিত হয়ে গবেষণায় চপশিল্প’ লেখা কেন? জবাবে তাপস বলছেন, ‘‘এটা প্রাথমিক এবং ব্যক্তিগত কপিতে লেখা হয়ে গিয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ে যেটা জমা দেওয়া হয়েছে তাতে এই লেখাটা নেই।’’ বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণাপত্রের যে কপি জমা দেওয়া হয়েছে তার ছবিও আনন্দবাজার অনলাইনকে পাঠিয়েছেন তাপস। সেখানে যদিও মমতার নাম নেই। রয়েছে শুধুই ইংরেজি শিরোনাম।
তবে কণার দাবি, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর চপশিল্প নিয়ে বক্তব্য নিয়ে অনেকে অনেক ভালমন্দ বলেছিলেন। সেখান থেকেই আমার এই গবেষণার ভাবনা আসে।’’ গবেষণার এই কাজে বেশ খুশিও কণা। তিনি বলেন, ‘‘আমি গবেষণা করে দেখেছি, পথচলতি যে সব চপের দোকান দেখা যায়, তার উপরে প্রচুর মানুষ নির্ভর করে থাকেন। চপশিল্পের মাধ্যমে মহিলারা কতটা স্বনির্ভর হতে পেরেছেন সেটাও এই গবেষণায় উঠে এসেছে।’’