Local Train

ট্রেন বাড়াতে ফের অনুরোধ রাজ্যের 

রাজ্যের প্রস্তাব মেনে এমনিতেই ট্রেনের সংখ্যা বাড়িয়ে প্রায় ৪০% করেছে দক্ষিণ-পূর্ব রেল। ৮১টি লোকাল ট্রেন চালাবে তারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০২০ ০৪:৩৯
Share:

ফাইল চিত্র।

বিস্তর টানাপড়েনের পরে লোকাল ট্রেন পরিষেবা শুরু হতে চলেছে দিন তিনেক পরে। তাই আপাতত ‘চাপমুক্ত’ হলেও ট্রেনে ভিড়ের জেরে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির দুশ্চিন্তা কাটছে না রাজ্য সরকারের। সেই জন্য শতাংশের সীমাবদ্ধতায় আটকে না-থেকে ফের পরিস্থিতি অনুযায়ী ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানোর আবেদন জানাল রাজ্য প্রশাসন। সেই সঙ্গে লোকাল পরিষেবা শুরুর চার দিন আগেই, শনিবার আদর্শ আচরণবিধি চূড়ান্ত করেছে নবান্ন। সেই আচরণবিধি রূপায়ণ করতে রেলের সঙ্গে নিখুঁত সমন্বয়ে জোর দিচ্ছে সরকার।

Advertisement

বুধবার, ১১ নভেম্বর লোকাল পরিষেবা শুরু করার সিদ্ধান্তের পর থেকেই জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞেরা সম্ভাব্য বাড়তি সংক্রমণ নিয়ে সরকারের কাছে বার বার আশঙ্কা ও উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। তাঁদের বক্তব্য, সব ধরনের যাত্রীর সুবিধার্থে এই পরিষেবা চালু হওয়ায় আরও অনেক বেশি সতর্ক থাকা প্রয়োজন।

এমনিতেই প্রাথমিক প্রতিশ্রুতির দ্বিগুণ সংখ্যায় ট্রেন চালাতে রাজি হয়েছে রেল। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, সম্ভব হলে সেই সংখ্যা আরও বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনা করতে রেলকে ফের অনুরোধ করা হয়েছে। সরকারের বক্তব্য, আশঙ্কা থাকলেও দুর্গোৎসবের পরে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে।

Advertisement

আরও পডুন: এনামুলের অন্তর্বর্তী জামিন, জেরায় হাজিরার নির্দেশ

আরও পডুন: কয়লা নিয়ে তদন্তে উদ্যোগী সিবিআই

একই ধরনের সতর্কতা থাকছে কালীপুজোয়। কিন্তু লোকাল ট্রেন চালু হলে প্রতিনিয়ত বহু মানুষ যাতায়াত করবেন। তখন কোভিড সুরক্ষা বিধি ঠিকমতো না-মানলে সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়বে। তাই আগেভাগে রক্ষাকবচ নিশ্চিত করতে চায় নবান্ন। ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানোর ব্যাপারে বৃহস্পতিবার সওয়াল করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। “স্বল্প সময়ের ব্যবধানে যত বেশি ট্রেন চলবে, ভিড় তত কম হবে। তখন সুরক্ষা বিধি পালনে বাধা থাকবে না। রেল-কর্তৃপক্ষও পরিস্থিতিটা বুঝছেন,” বলেন এক প্রশাসনিক কর্তা।

আদর্শ বিধি

• চাহিদা অনুযায়ী ট্রেনের সংখ্যা বৃদ্ধি

• ট্রেনের কামরায় ঘনঘন জীবাণুনাশ

• মাস্ক পরে ট্রেনে ওঠা বাধ্যতামূলক

• প্রতিটি স্টেশনে সতর্কতাবিধি ঘোষণা

• বিজ্ঞাপন দিয়ে সতর্কতাবিধি প্রচার

• রেল এবং রাজ্য পুলিশের সমন্বয় ও দায়িত্ব ভাগ

রাজ্যের প্রস্তাব মেনে এমনিতেই ট্রেনের সংখ্যা বাড়িয়ে প্রায় ৪০% করেছে দক্ষিণ-পূর্ব রেল। ৮১টি লোকাল ট্রেন চালাবে তারা। তার মধ্যে হাওড়া থেকে চলবে ৪০টি। বিভিন্ন গন্তব্য থেকে ৪১টি ট্রেন আসবে হাওড়ায়। হাওড়া-মেদিনীপুর রুটে ১৩টি, হাওড়া-পাঁশকুড়া রুটে আটটি ট্রেন চলবে। আমতা পর্যন্ত চারটি, খড়্গপুর পর্যন্ত চারটি, হলদিয়া এবং মেচেদা পর্যন্ত চলবে দু’টি করে ট্রেন। সাঁতরাগাছি-পাশকুঁড়া রুটে একটি, সাঁতরাগাছি-মেচেদা রুটে দু’টি ট্রেন থাকছে। শালিমার-মেচেদা, সাঁতরাগাছি-মেচেদা, পাঁশকুড়া-দিঘা, মেচেদা-দিঘা এবং শালিমার-সাঁতরাগাছির মধ্যেও অল্প কিছু ট্রেন চলবে। ফিরতি পথেও বিন্যাস মোটামুটি একই। শিয়ালদহ ডিভিশনে ৪১৩টি এবং হাওড়া ডিভিশনে ২০১টি ট্রেন চালানোর প্রস্তাব দিয়েছে পূর্ব রেল। সোমবারের সম্ভাব্য বৈঠকে তা চূড়ান্ত হলে সরকারি ভাবে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হবে। রেল সূত্রে জানানো হয়, যাত্রী বাড়লে সেই অনুযায়ী ট্রেনও বাড়বে। ট্রেনের সংখ্যা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে পুরনো সময়সূচি অনুসরণ করা হবে।

আরও পড়ুন: ট্রেন বাড়লেও সময় বাড়ছে না মেট্রোয়

রাজ্যের আদর্শ আচরণবিধি অনুযায়ী স্টেশনগুলিতে থার্মাল স্ক্রিনিংয়ের ব্যবস্থা থাকতেই হবে। ঘনঘন জীবাণুনাশ করতে হবে সব কামরায়। ট্রেনে উঠতে হলে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। প্রতিটি স্টেশনে সুরক্ষা বিধি ঘনঘন ঘোষণা করতে হবে। থাকতে হবে চোখে পড়ার মতো বিজ্ঞাপন। পূর্ণ দৈর্ঘ্যের একটি ট্রেনে যত যাত্রী বসেন, তার অর্ধেক লোক তোলার কথা বলেছে রেল-রাজ্য। রেল সূত্রের খবর, এটা নিশ্চিত করতে মেট্রোর পন্থা অনুসরণ করে ট্রেনের কামরায় একটি করে আসন ছেড়ে রাখা হবে। বিভিন্ন স্টেশনের সুরক্ষা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে শুক্রবার যৌথ সমীক্ষা চালায় আরপিএফ এবং জিআরপি। স্টেশনগুলিতে কারা, কোথায়, কোন দায়িত্ব কী ভাবে পালন করবেন, তার একটি রূপরেখা তৈরি করা হয়েছে। কিছু স্টেশনে নোডাল অফিসারের অধীনে কাজ করবে দু’টি বাহিনীই। কোনও সমস্যায় দ্রুত সাহায্য পেতে চালু করা হবে হেল্পলাইন নম্বর। যাত্রীদের গাদাগাদি ভিড় এড়াতে স্টেশনে প্রবেশ ও প্রস্থানের পৃথক পথ চিহ্নিত করে দেওয়া হবে। তা ছাড়া, টিকিট ছাড়া প্ল্যাটফর্মে যাত্রীদের প্রবেশ ঠেকাতে চালানো হবে কড়া নজরদারি।

আরও পড়ুন: দিঘাগামী লোকাল ট্রেন বুধবার থেকেই, খুশি পর্যটক থেকে ব্যবসায়ীরা

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement