অমিত রাজের ছবি হাতে বাবা ভূষণ কুমার। নিজস্ব চিত্র
পুরুলিয়া সৈনিক স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র অমিত রাজ করোনার সময় স্কুল বন্ধ থাকায় বিহারের নালন্দায় নিজের গ্রামের বাড়িতে ফিরে গিয়েছিল। সেই সময়ই একদিন সকালে জগিং করতে বেরিয়ে অমিত দেখতে পায়, পাশের বাড়িতে গ্যাস লিক করে আগুন ধরে গিয়েছে। তিনটি শিশু আগুনের মধ্যে আটকে গিয়েছে দেখে কিছু না ভেবে ১৫ বছরের অমিত আগুনের মধ্যে ঝাঁপিয়ে পড়ে। দু’টি শিশুকে উদ্ধার করে আনার পরে তৃতীয় জনকে উদ্ধার করতে গিয়ে অমিত নিজেই আগুনে পুড়ে যায়। শরীরের ৮৫ শতাংশ অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় তাকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তার পরে পুরুলিয়ার স্কুলের উদ্যোগে দিল্লির সফদরজং হাসপাতালেও নিয়ে আসা হয়েছিল। কিন্তু দিন দশেক লড়াইয়ের পরে অমিতের মৃত্যু হয়।
২০২০ সালের ৩ ডিসেম্বর সেই ঘটনার জন্য অমিতকে এ বার প্রজাতন্ত্র দিবসে মরণোত্তর জাতীয় সাহসিকতার পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে। কোভিডের জন্য গত দু’বছর শিশু-কিশোরদের সাহসিকতার জাতীয় পুরস্কার দেওয়া হয়নি। এ বার একইসঙ্গে ২০২০, ২০২১ ও ২০২২, তিন বছরে মোট ৫৬ জনকে জাতীয় সাহসিকতার পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে। তাদের মধ্যে একমাত্র অমিতকে মরণোত্তর ভারত পুরস্কারের জন্য বাছাই করেছে ‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর চাইল্ড ওয়েলফেয়ার’। অমিতের বাবা ভূষণ কুমার পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে বিহার থেকে মহারাষ্ট্রে গিয়ে কাজ করেন। ভূষণ বলেন, ‘‘অমিত নিজের উদ্যোগেই স্কুলের প্রবেশিকা পরীক্ষায় বসে পুরুলিয়া সৈনিক স্কুলে পড়ার সুযোগ পেয়েছিল। স্কুল কর্তৃপক্ষ, ওর বন্ধুরা অনেক চেষ্টা করেছিল বাঁচাতে। কিন্তু দশ দিন লড়াইয়ের পরে অমিত দিল্লির হাসপাতালে মারা যায়।’’