সামসুর রহমান একটি হোয়াটস্অ্যাপ গ্রুপ তৈরি করেছেন। নাম দিয়েছেন, ‘বিজেপি বাঁচাও মঞ্চ’।
দল ঠিক ভাবে চলছে না। রাজ্য নেতৃত্বের দূরদর্শিতার অভাবে বাংলায় বিজেপির ক্ষতি হয়েই চলেছে। এমনই অভিযোগ তুলে পাল্টা সংগঠন গড়তে চান গেরুয়া শিবিরের সংখ্যালঘু নেতা সামসুর রহমান। রাজ্য বিজেপির সংখ্যালঘু মোর্চার প্রাক্তন সহ-সভাপতি দলের ক্ষুব্ধদের নিয়ে জোট বাঁধার জন্য প্রাথমিক ভাবে একটি হোয়াটস্অ্যাপ গ্রুপ তৈরি করেছেন। নাম দিয়েছেন, ‘বিজেপি বাঁচাও মঞ্চ’।
জানিয়েছেন, খুব তাড়াতাড়ি দলের ক্ষুব্ধ নেতাদের নিয়ে তিনি কলকাতায় একটি সভা করতেও চান। সেই সভায় প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথাগত রায়, রাহুল সিংহ থেকে সায়ন্তন বসু, রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়দেরও ডাকার ইচ্ছা রয়েছে।
আনন্দবাজার অনলাইনকে হুগলির জাঙ্গিপাড়ার বাসিন্দা সামসুর জানান, ‘‘আমি অনেক দিন থেকেই বিজেপির সঙ্গে রয়েছি। কিন্তু এখন যে অবস্থা দাঁড়িয়েছে, তাতে দলকে বাঁচাতে কিছু করা দরকার বলে মনে হচ্ছে। প্রথমে ভেবেছিলাম কলকাতার কোনও ছোট সভাঘরে বৈঠক করব। কিন্তু এখন যা সাড়া দেখছি, তাতে মহাজাতি সদন ভাড়া নেওয়ার কথা ভাবছি।’’
কিন্তু সামসুর যাঁদের সঙ্গে নিয়ে দলের এই ‘সংস্কার’ চাইছেন, তাঁরা কী বলছেন? তাঁর হোয়াটস্অ্যাপ গ্রুপে রাজ্য মহিলা মোর্চার সভানেত্রী তনুজা চক্রবর্তীকেও রাখেন সামসুর। এই প্রসঙ্গে তনুজা আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘কেউ কোনও গ্রুপ বানালে অন্যদের ঢুকিয়ে নেওয়া যায়। এর জন্য অনেকেই অনুমতিও নেন না। রাজ্য দলের অনেক গ্রুপে থাকতে হয়। মহিলা মোর্চার জেলার গ্রুপই ৪২টা। নতুন কোনও গ্রুপে আমাকে কেউ সদস্য বানিয়ে নিয়েছে কি না খেয়াল করিনি। তবে ওই নামের কারও সঙ্গে আমার পরিচয় নেই।’’ বুধবারই অবশ্য তনুজাকে গ্রুপ থেকে বাদ দিয়েছেন সামসুর। বিজেপির আর এক নেতা তথা উদ্বাস্তু শাখার প্রাক্তন আহ্বায়ক মোহিত রায় বলেন, ‘‘আমাকেও গ্রুপে রাখা হয়েছিল। ফোনও করেছিলেন উনি। তবে আমি সেই গ্রুপ ছেড়ে বেরিয়ে এসেছি।’’ গ্রুপে থাকলেও কলকাতায় প্রস্তাবিত সভা নিয়ে তাঁর সঙ্গে কোনও আলোচনা হয়নি বলেও জানিয়েছেন তথাগত।
এখনও গ্রুপে রয়েছেন রাজ্যের সহ-সভাপতি রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্প্রতি বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডার উপস্থিতিতে হওয়া রাজ্য বিজেপির কর্মসমিতির বৈঠকে ডাক না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। তবে ওই গ্রুপে থাকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘আমায় জানিয়ে ঢোকানো হয়নি। আর সামসুর রহমানকে আমি ভাল ভাবে চিনিও না।’’ উল্লেখযোগ্য ভাবে সামসুর তাঁর তৈরি গ্রুপে রেখেছেন রাজ্য বিজেপি প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) সুব্রত চট্টোপাধ্যায়কে। আরএসএস প্রচারক সুব্রত বিজেপি থেকে সঙ্ঘের কাজে ফিরেও এই গ্রুপে কেন রয়েছেন? জবাবে সুব্রত আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘আমি তো এ রকম কিছু জানিই না। বিজেপিতে থাকার সময়ে আমার একটা হোয়াটস্অ্যাপ নম্বর ছিল। সেটা এখন আর ব্যবহার করি না। হয় তো সেই নম্বরটাকে গ্রুপে নিয়ে নেওয়া হয়েছে।’’
সামসুর অবশ্য দাবি করছেন, সকলের সঙ্গে কথা বলেই তিনি গ্রুপ বানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘কেউ যদি মনে করেন আমার সঙ্গে তিনি থাকবেন না, তবে তো গ্রুপ ছেড়ে বেড়িয়ে যেতেই পারেন। এখন কে কী বলছেন জানি না, তবে আমি সবার সঙ্গেই আলাদা করে কথা বলেছি।’’
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।